Tuesday, April 1, 2025

এসএসসি/SSC ২০২৫ পরীক্ষার্থীদের জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্র(লিখিত অংশ)পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস অনুযায়ী উত্তরসহ মডেল টেস্ট

এসএসসি/SSC ২০২৫ পরীক্ষার্থীদের জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্র(লিখিত অংশ)পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস অনুযায়ী উত্তরসহ মডেল টেস্ট

এসএসসি-২০২৫ পরীক্ষা প্রস্তুতির পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট

বিষয়: বাংলা দ্বিতীয় পত্র (লিখিত অংশ)

SSC/HSC / ষষ্ঠ থেকে নবম/দশম  শ্রেণির  শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন সাজেশান্স ও নোট পেতে আমাদের Website Eduexplain / Facebook এ Like/Follow দিয়ে রাখো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি Subscribe করতে পারো এই লিংক থেকে

সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, Eduexplain বহুনির্বাচনি নিয়ে  Live MCQ আয়োজন করতে যাচ্ছে। আপনাদের পরীক্ষা প্রস্তুতিকে আরো জোরদার করবে  MCQ  টেস্ট  । এখন থেকে নিয়মিত Live MCQ আয়োজন করা হবে।ইনশাআল্লাহ।

READ ALSO

নির্ভুল ও সকল শিট Word file / pdf  পেতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে  ইনবক্স করুন WhatsApp নাম্বারে ০১৭৭৩৫৮৬১৭৬ । ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের Website www.eduexplain.com  ও You Tube Channel Subscribe  করতে পারো এই লিংক থেকে 

১.কোনো একটি বিষয়ে অনুচ্ছেদ রচনা    কর:১০

(ক) শীতের সকাল

(খ) পদ্মা সেতু

২. যেকোনো একটি বিষয়ে পত্র লেখ:                                                  ১০

(ক) মনে কর, তোমার নাম ‘সুমন’। তুমি ঢাকার অধিবাসী। তোমার বরিশালের বন্ধু ‘সুজন’ সাম্প্রতিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত। আহত বন্ধুকে সমবেদনা জানিয়ে একটি পত্র লেখ।

অথবা, মনে কর তুমি দিনাজপুর জেলার বালুবাড়ী মহল্লার বাসিন্দা স্বপন। আর্সেনিকমুক্ত পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পৌরসভা মেয়রের কাছে একখানা আবেদনপত্র লেখ।

৩. (ক) সারাংশ লেখ:                                                                                  ১০

কোনো সভ্য জাতিকে অসভ্য করার ইচ্ছা যদি তোমার থাকে তাহলে তাদের সব বই ধ্বংস কর এবং সকল পণ্ডিতকে হত্যা কর, তোমার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে। লেখক, সাহিত্যিক ও পণ্ডিতেরাই জাতির আত্মা। এই আত্মাকে যারা অবহেলা করে, তারা বাঁচে না। দেশকে বা জাতিকে উন্নত করতে চেষ্টা করলে, সাহিত্যের সাহায্যেই তা করতে হবে। মানব মঙ্গলের জন্য যত অনুষ্ঠান আছে, তার মধ্যে এটাই প্রধান ও সম্পূর্ণ। জাতির ভেতর সাহিত্যের ধারা সৃষ্টি কর, আর কিছুর আবশ্যকতা নেই।

অথবা,

(খ) সারমর্ম লেখ।

একদা ছিল না জুতা চরণ যুগলে

দহিল হৃদয়মন সেই ক্ষোভানলে।

ধীরে ধীরে চুপি চুপি দুঃখাকুল মনে

গেলাম ভজনালয়ে ভজন কারণে।

সেথা দেখি একজন পদ নাহি তার

অমনি জুতার খেদ ঘুচিল আমার।

পরের দুঃখ করিলে চিন্তন,

আপন মনের দুঃখ থাকে কতক্ষণ?

৪. যেকোনো একটি ভাব-সম্প্রসারণ কর:                                ১০

(ক) ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।

অথবা, অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে

তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে।

৫. যেকোনো একটি বিষয়ে প্রতিবেদন রচনা কর                                    ১০

(ক) বিদ্যালয়ের সাহিত্য সাংস্কৃতিক সপ্তাহ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন তৈরি কর।

অথবা,

(খ) তোমাদের বিদ্যালয়ের বাংলা নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠানমালার বিবরণ দিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।

৬. যেকোনো একটি বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা কর:                                                ২০

(ক) শ্রমের মর্যাদা

(খ) জাতিগঠনে নারীসমাজের ভূমিকা

(গ) পরিবেশ সংরক্ষণে বনায়ন

উত্তরমালা

১. যেকোনো একটি বিষয়ে অনুচ্ছেদ রচনা কর

(ক) শীতের সকাল: প্রকৃতির অবারিত সৌন্দর্যভেলায় আনন্দ উপাদানের কোনো কমতি নেই। ঘর থেকে দু’ পা ফেলে বাইরে দৃষ্টি মেললেই চোখে পড়ে নিসর্গের অমৃত লহরি। তার মধ্যে শীতের সকাল অন্যতম। বাংলাদেশের ঋতুচক্রে শীত আসে রূপ ও রসের ডালি সাজিয়ে। শীতের মোহনীয় নৈসর্গিক রূপ ধরা পড়ে শিশির স্নাত সকাল বেলায়। কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকে চারপাশ। সূর্যিমামা মুখ লুকায় লজ্জায়, অভিমানে। ধীরে ধীরে মুখ বাড়িয়ে হাসে সোনালি সূর্য। ঘাসের ডগায় পড়ে থাকা শিশির বিন্দুতে রোদের আলো পড়ে মুক্তোর মতো চকচক করে। শীতের সকালে গ্রামে শুরু হয় পিঠা উৎসব। হিম শীতল ঠান্ডায় ভাপা, দুধপুলি, দুধচিতই, পাটিসাপটা প্রভৃতি পিঠা রসনায় আনে তৃপ্তির আস্বাদ। চাদর মুড়ি দিয়ে রোদে বসে পিঠা খাওয়ার সে কী তৃপ্তি! অন্যদিকে গৃহহীন, বস্ত্রহীন মানুষ খোঁজে একটু আশ্রয়, প্রশান্তির উষ্ণ চাদর। দরিদ্র ছেলেমেয়েরা উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রোদের আদরের ভরসায়। রাত জাগে সকালের প্রত্যাশায়, সকাল জাগে সূর্যের স্পর্শ কামনায়। সবকিছু মিলিয়ে শীতের সকাল আমার প্রিয় মুহূর্ত যা অপূর্ব নৈসর্গিক উপাদানে ভাস্বর।

(খ) পদ্মা সেতু: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি অভাবনীয় কীর্তি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এ বৃহৎ সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ২২ মিটার। এর পূর্ব প্রান্তে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া এবং পশ্চিম প্রান্তে শরিয়তপুরের জাজিরা। শুধু কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে এ সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ৭ ডিসেম্বর, ২০১৪ সালে। দ্বিতল এ সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন এবং নিচ দিয়ে ট্রেন চলবে। এটি নির্মাণ করেছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। সেতু নির্মাণের বিশাল কর্মযজ্ঞে অংশ নিয়েছে দুই হাজার বিদেশি প্রকৌশলীসহ পরামর্শক, বিশেষজ্ঞ এবং প্রায় ২০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ জুন, ২০২২ পদ্মা সেতুর বর্ণাঢ্য উদ্বোধন করেন এবং প্রথম যাত্রী হিসেবে নিজ হাতে টোল দিয়ে সেতু পার হন । ২৬ জুন থেকে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। জাতীয় অর্থনীতিতে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব, তাৎপর্য ও উপযোগিতা অপরিসীম। এ সেতুর মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সড়কপথে যুক্ত হয়েছে দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলা। এ সেতুর কল্যাণে মানুষ খুব সহজে এবং অল্প সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত ও নানা ধরনের পণ্য সরবরাহ করতে পারছে; ইতোমধ্যে গড়ে উঠছে ছোট-বড় নানা শিল্প ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। সার্বিকভাবে পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় জিডিপিতে প্রতি বছর যোগ করবে ১.২৬ শতাংশ। ডিজাইন কমপ্লেক্সিটি, নির্মাণশৈলী ও ভৌত কাজের পরিমাণ বিবেচনায় এ সেতু ইতোমধ্যেই ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যবসাশ্রয়ী স্থাপনা’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং সচল অর্থনীতির সফল চাবিকাঠি পদ্মা সেতু নির্মানের মাধ্যমে নিজ গৌরবে আরও একবার মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।

২. যেকোনো একটি বিষয়ে পত্র লেখ :

(ক) মনে কর, তোমার নাম ‘সুমন’। তুমি ঢাকার অধিবাসী। তোমার বরিশালের বন্ধু ‘সুজন’ সাম্প্রতিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত। আহত বন্ধুকে সমবেদনা জানিয়ে একটি পত্র লেখ।

০৪. ০৯. ২০২২

১৭১, মগবাজার, ঢাকা

প্রিয় সুজন,

তোমার ছোটবোনের ফোন পেয়ে জানতে পারলাম যে, গত পরশুর সড়ক দুর্ঘটনায় তুমি আহত হয়েছ। শুনে খুবই কষ্ট পেলাম। তোমাকে দেখার জন্য মনটা ছটফট করছে। কিন্তু মাসিক পরীক্ষা চলছে বলে যেতে পারছি না। তাই চিঠি লিখলাম ।

পত্রিকায় দেখেছি, গত পরশু বিকেলে বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কেউ মারা না গেলেও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে অনেকে। আহতদের মধ্যে তুমিও একজন। তোমার অবস্থা ততটা মারাত্মক নয় জেনে স্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যেই তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে। খালু আর খালামণিকে আমার সালাম জানিও। শুভ কামনা রইল তোমার জন্য।

ইতি

তোমার বন্ধু

সুমন

 

বি: দ্র: ডাকটিকেট/খাম দিতে হবে।

অথবা, মনে কর তুমি দিনাজপুর জেলার বালুবাড়ী মহল্লার বাসিন্দা স্বপন। আর্সেনিকমুক্ত পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পৌরসভা মেয়রের কাছে একখানা আবেদনপত্র লেখ।

১৪. ০৮. ২০২২

মেয়র

দিনাজপুর পৌরসভা।

বিষয়: আর্সেনিকমুক্ত পানি সরবরাহের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন।

জনাব, সবিনয় নিবেদন এই যে, আমরা আপনার পৌরসভার বালুবাড়ী মহল্লার বাসিন্দা। প্রায় দু’বছর আগে থেকে আমাদের এলাকায় খাওয়ার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। বলা হয়েছিল এ পানি আর্সেনিকমুক্ত ও বিশুদ্ধ। কিন্তু প্রায় বছর খানেক আগে থেকে দেখা যাচ্ছে, যারা বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও শিশু তাদের হাত-পায়ে একধরনের ঘা হয়ে হাত-পায়ে সাদা ছোপ পড়েছে । কারও কারও শরীরে চুলকানি জাতীয় ঘা দেখা দিয়েছে। কয়েকজন জেলা হাসপাতালের চর্ম বিভাগে দেখানোর পর চিকিৎসকরা বলেছেন, আর্সেনিকযুক্ত পানি পানের কারণে এ ধরনের ঘা হয়। এরপর স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন এসে পানি পরীক্ষা করে জানান যে ব্যবহৃত পানিতে আর্সেনিক রয়েছে, যা মাত্রাতিরিক্ত ও অত্যন্ত ক্ষতিকর। উল্লেখ্য যে, আমাদের পার্শ্ববর্তী মহল্লায়ও এ ধরনের রোগের বিস্তার ঘটছে।

এমতাবস্থায় আপনার কাছে আমাদের আকুল আবেদন, যত দ্রুত সম্ভব আমাদের এলাকায় আর্সেনিকমুক্ত পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাধিত করবেন।

নিবেদক,

রুহুল আমীন স্বপন

বালুবাড়ী মহল্লার বাসিন্দাদের পক্ষে,

বালুবাড়ী, দিনাজপুর।

 

৩. (ক) সারাংশ লেখ :

কোনো সভ্য জাতিকে অসভ্য করার ইচ্ছা যদি তোমার থাকে তাহলে তাদের সব বই ধ্বংস কর এবং সকল পণ্ডিতকে হত্যা কর, তোমার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে। লেখক, সাহিত্যিক ও পণ্ডিতেরাই জাতির আত্মা। এই আত্মাকে যারা অবহেলা করে, তারা বাঁচে না। দেশকে বা জাতিকে উন্নত করতে চেষ্টা করলে, সাহিত্যের সাহায্যেই তা করতে হবে। মানব মঙ্গলের জন্য যত অনুষ্ঠান আছে, তার মধ্যে এটাই প্রধান ও সম্পূর্ণ। জাতির ভেতর সাহিত্যের ধারা সৃষ্টি কর, আর কিছুর আবশ্যকতা নেই।

সারাংশ: কোনো সভ্য জাতির উন্নয়নের প্রধান মাপকাঠি হলো, তাদের সাহিত্য অনুশীলন ও বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন। মূলত বুদ্ধিজীবীরাই জাতির প্রাণ। তাই জাতির কল্যাণের জন্য উন্নত সাহিত্যের ধারা সৃষ্টি করতে হবে। আর তার জন্য দরকার বুদ্ধিজীবীদের বাঁচিয়ে রাখা।

অথবা,

(খ) সারমর্ম লেখ।

একদা ছিল না জুতা চরণ যুগলে

দহিল হৃদয়মন সেই ক্ষোভানলে।

ধীরে ধীরে চুপি চুপি দুঃখাকুল মনে

গেলাম ভজনালয়ে ভজন কারণে।

সেথা দেখি একজন পদ নাহি তার

অমনি জুতার খেদ ঘুচিল আমার।

পরের দুঃখ করিলে চিন্তন,

আপন মনের দুঃখ থাকে কতক্ষণ?

সারমর্ম: সাধুর পায়ে জুতা ছিল না বলে তার মনে খুব দুঃখ। কিন্তু প্রার্থনালয়ের সামনে পা-হারা ব্যক্তিকে দেখে তার সে খেদ দূর হলো। দুঃখ অন্তরে উপলব্ধি করার অনুভূতি জাগ্রত হলো তার। পরের দুঃখকে নিজের হৃদয়ে একবার উপলব্ধি করলে নিজের সামান্য দুঃখ-কষ্টের কথা আমাদের আর মনে থাকে না।

৪. যেকোনো একটি ভাব-সম্প্রসারণ কর:

(ক) ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।

ভাব-সম্প্রসারণ : ত্যাগ করতে না পারলে ভোগ করে আনন্দ পাওয়া যায় না। স্বার্থলোলুপতা, ভোগাকাঙ্ক্ষা বা আত্মসুখপরায়ণতা মনুষ্যত্বের পরিপন্থি। যে ব্যক্তি শুধু নিজের স্বার্থচিন্তায় তৎপর, নিজের ভোগবিলাসে নিমজ্জিত, জগৎ ও জীবনের বৃহত্তর অঙ্গন থেকে সে স্বেচ্ছানির্বাসিত। জগৎবাসীর ভালোমন্দ, সুখদুঃখ, মঙ্গল-অমঙ্গল তার হৃদয়মনকে স্পর্শ করে না, এ পৃথিবীর আলো-আঁধার তার মানসরাজ্যে কোনোরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে না। বিরাট এ জগৎ সংসারের কল্যাণ-অকল্যাণ সম্পর্কে যে একান্ত নির্লিপ্ত ও উদাসীন, তার মানব জনম বৃথা। তার বেঁচে থাকা না থাকা সমান। কেননা জীবনের সার্থকতা তথা মনুষ্য জন্মের সফলতা কখনো স্বার্থপরতায় নিহিত নয়। মানুষের যে দুর্লভ গুণটি তাকে অপরাপর সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছে তা-ই মনুষ্যত্ব। মনুষ্যত্বের সারকথা, জাগ্রত বিবেককে শুভ ও কল্যাণের পথে পরিচালিত করা। অপরাপর প্রাণীর প্রতি সহজাত মমত্ববোধ মানুষকে মহিমান্বিত ও গৌরবান্বিত করে তোলে। তাই মানুষকে হতে হয় অপরের হিতৈষী আত্মসুখ বিসর্জন দিয়ে পরের কল্যাণে নিজেকে অকাতরে বিলিয়ে দেওয়ার মধ্যেই মনুষ্যত্ববোধের বিকাশ ঘটে। ভোগ মানুষকে অবসন্ন করে, তার চিন্তাশক্তিকে ভোঁতা করে ও জীবনকে হীনতার অভিশাপপুষ্ট করে। আগুনে ঘি ঢাললে আগুন যেমন না নিভে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে, তেমনি ভোগবিলাসীর জীবনও নতুন থেকে নতুনতর ভোগের নেশায় বহু গুণ বেগে জ্বলতে থাকে। অথচ ত্যাগের মধ্যেই পরম শান্তি লাভ করা যায়, জীবনকে গৌরবান্বিত করে তোলা যায়। ত্যাগ মানুষের পরম লক্ষ হওয়া উচিত। ভোগীকে কেউ মনে রাখে না, মনে রাখে ত্যাগীকে। এ পৃথিবীতে মানুষের জন্মই হয়েছে মানুষের তথা সৃষ্টির উপকার করার জন্য। যে মানুষ শুধু পেতেই চায় দিতে চায় না, সে পাওয়ারও উপযোগী নয়। তাকে কোনো কিছু দান করার অর্থই হবে অপাত্রে প্রদান। বস্তু ত্যাগের মধ্যেই পরিপূর্ণ তৃপ্তি ও সুখ। এ জন্যই বলা হচ্ছে ভোগে সুখ নাই, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।

অথবা,

অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে

তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে।

ভাব-সম্প্রসারণ : অন্যায়কারী ও অন্যায়ে সাহায্যকারী বা সহ্যকারী উভয়েই সমান দোষী। মানুষের যেমন মানুষ হিসেবে কতকগুলো অধিকার আছে তেমনি মানুষ হিসেবে তার কতকগুলো দায়িত্বও রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়েই অধিকার অর্জিত হয়। অন্যায় না করা ও অন্যায় না সহা, এ দুটিই মনুষ্যত্বের দায়িত্ব। আমার অধিকার ততক্ষণ, যতক্ষণ অন্যেরও ঠিক সেই অধিকারে আমি হস্তক্ষেপ না করি, করলে তা অন্যায় হবে। অন্যায় কাজের দ্বারা মানুষের ক্ষতি সাধিত হয়। তাই অন্যায়কারী শাস্তির যোগ্য অপরাধী। ক্ষমা মহৎ গুণ হলেও সব ধরনের অন্যায়ের ক্ষেত্রে ক্ষমা প্রদর্শন সমীচীন নয়। কারণ অন্যায়কারীর উপযুক্ত বিচার না হলে সমাজে অন্যায় কাজের প্রভাব বেড়ে গিয়ে সমাজকে অপরাধের আখড়ায় পরিণত করবে। ফলে সমাজ হয়ে উঠবে অন্যায়, অপরাধের লীলাক্ষেত্র এবং মনুষ্য বসবাসের অনুপযোগী। তাই সর্বজনীন কল্যাণ নিশ্চিত করার স্বার্থে অন্যায়কারীকে সাজা দেয়া উচিত। কোনো অবস্থাতেই বিনা বিচারে তাকে ক্ষমা করা উচিত নয়। ক্ষমা দুর্বলতার পরিচায়ক, অন্যায়ের শামিল, অনুরূপ ক্ষমা বাঞ্ছনীয় নয়। তাই যে অন্যায় করে এবং যে সহ্য করে উভয়ই ঘৃণাযোগ্য। প্রতিবাদ, প্রতিরোধের মাধ্যমে অন্যায়কে রুখতে হবে।

৫. যেকোনো একটি বিষয়ে প্রতিবেদন রচনা কর:

(ক) বিদ্যালয়ের সাহিত্য সাংস্কৃতিক সপ্তাহ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন তৈরি কর।

২৫ জুলাই, ২০২২

প্রধান শিক্ষক

লাইসিয়াম স্কুল, ময়মনসিংহ।

বিষয়: বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ সম্পর্কিত প্রতিবেদন।

জনাব,

সম্প্রতি সমাপ্ত বিদ্যালয়ের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ/বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পর্কে আপনার অবগতির জন্য একটি প্রতিবেদন পেশ করছি-

১. গত ১৫ জুলাই থেকে ২১ জুলাই, ২০২২ তারিখ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ/বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্যাপিত হয়েছে। এতে যে সমস্ত বিষয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে তা হলো- বিতর্ক, উপস্থিত বক্তৃতা, নির্ধারিত বক্তৃতা, কবিতা আবৃত্তি, গল্প বলা, রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল গীতি, আধুনিক গান, পল্লীগীতি ও ভাওয়াইয়া। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছে উচ্চ লাফ, লম্বা লাফ, লৌহ গোলক নিক্ষেপ, বর্ষা নিক্ষেপ, সাইকেল দৌড়, ভার উত্তোলন ও দড়ি-লাফ।

২. বিদ্যালয়ের সকল শ্রেণি থেকে ছাত্রছাত্রীরা এসব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। সর্বসাকুল্যে এই প্রতিযোগিতায় সকল বিষয়ে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীর সংখ্যা ছিল ৭০ জন। প্রতিদিন প্রথম আড়াই ঘণ্টা নিয়মিত ক্লাসের পর প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকল ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক এই প্রতিযোগিতায় উপস্থিত থেকে অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহিত করেন।

৩. প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের পুরষ্কৃত করার ব্যবস্থা ছিল। পুরস্কার হিসেবে বাছাইকৃত ও প্রয়োজনীয় বইপুস্তক প্রদান করা হয়েছে। পুরস্কারের মোট মূল্যমান ছিল পাঁচ হাজার টাকা। প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ হয়েছে দশম শ্রেণির ছাত্র সহিদুল ইসলাম ও দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ হয়েছে নবম শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া তাসমিন। তাদেরকে বিশেষভাবে পুরষ্কৃত করা হয়েছে।

 

৪. অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেছিলেন বরেণ্য কবি আল মাহমুদ এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রখ্যাত কবি ও গবেষক ডক্টর আশরাফ সিদ্দিকী।

৫. সাহিত্য-সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বিপুল উৎসাহ এতে প্রতিফলিত হয়েছে। দর্শকদের উপস্থিতি এবং সুশৃঙ্খলার সাথে অনুষ্ঠানটি খুবই সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে।

শাহরিয়ার নাফিস সিফাত

প্রতিবেদক

দশম শ্রেণি, রোল নং ২, লাইসিয়াম স্কুল

অথবা,

(খ) তোমাদের বিদ্যালয়ের বাংলা নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠানমালার বিবরণ দিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।

১৮ এপ্রিল, ২০২২

অধ্যক্ষ

শতদল স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা।

বিষয়: বাংলা নববর্ষ বরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালা প্রসঙ্গে প্রতিবেদন।

জনাব,

সম্প্রতি শতদল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠিত বাংলা নববর্ষ বরণ সম্পর্কে নিম্নোক্ত প্রতিবেদন পেশ করা হলো-

বিগত ১৪ এপ্রিল, ২০২২ অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ ১৪২৬ বিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ বরণ উপলক্ষে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছিল। এ উপলক্ষে কবিতা আবৃত্তি, রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল গীতি, উপস্থিত বক্তৃতা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় এবং প্রতিটি বিভাগের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পুরস্কারের মোট মূল্যমান ছিল পাঁচ হাজার টাকার বই। কবিতা আবৃত্তিতে প্রথম হয়েছে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী নীতু, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে নবম শ্রেণির ছাত্রী ছন্দা ও কৌশিকী রবীন্দ্র সংগীত ও নজরুল গীতিতে প্রথম হয়েছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী শম্পা। উপস্থিত বক্তৃতায় প্রথম হয়েছে নবম শ্রেণির ছাত্রী সোনিয়া। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যুগ্মভাবে প্রথম হয়েছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ফারিয়া এবং সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী দোলন। সবশেষে আয়োজন করা হয়েছিল যেমন খুশি তেমন সাজ। এতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে নবম শ্রেণির ছাত্রী ঋতু। সবকিছুই সমাপ্ত হয়েছে সুশৃঙ্খল আনন্দঘন পরিবেশে।

দীপ্ত অরিত্র অভ্র

প্রতিবেদক

দশম শ্রেণি, রোল নং-১

 

৬. যেকোনো একটি বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা কর:

(ক)শ্রমের মর্যাদা

‘বিশ্বপিতার মহা-কারবার এই দিন দুনিয়াটা

মানুষই তাহার মহামূল্যবান, কর্ম তাহার খাটা।’

-যতীন্দ্রমোহন বাগচী

ভূমিকা : এই বিশাল পৃথিবী বিশ্ববিধাতার মহাকারখানা। এখানে সকলকে সাধ্যমত পরিশ্রম করতে হয়, শ্রম দিতে হয়। সবাইকে যে যার ক্ষমতা অনুসারে সাজাতে হয় পরিশ্রমের অনবদ্য উপাচার। তাতেই সভ্যতার সৌধ হয়ে ওঠে অপরূপ। সভ্যতার এ চরম বিকাশের মূলে আছে যুগ – যুগান্তরের লক্ষ-কোটি মানুষের অফুরন্ত শ্রম। বহু মানুষ তাদের বহুদিনের শ্রম দান করে তিলে তিলে গড়ে তুলেছে সভ্যতার এই অনবদ্য তিলোত্তমা মূর্তি। তারা পাহাড় কেটে পথ প্রস্তুত করেছে, সেতু বন্ধনে বেঁধেছে নদীর উভয় তটভূমিকে, নির্মাণ করেছে প্রাসাদ অট্টালিকা। কেউ ফলিয়েছে সোনার ধান, কেউ বুনেছে লজ্জা নিবারণের বস্ত্র, কেউ বা জীবনকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য রচনা করেছে। সৌন্দর্যমণ্ডিত, শিল্প সৌকর্যময় নানা দ্রব্যসামগ্রী। সকলের পরিশ্রম বা শ্রমের যৌথ প্রয়াসে সম্ভব হয়েছে সভ্যতার এ অনবদ্য বিকাশ। সভ্যতা মানুষের শ্রমেরই সম্মিলিত যোগফল।

শ্রমের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা : মানবজীবনে শ্রমের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ছোট হোক বড় হোক সকলেরই কাজের প্রয়োজন আছে এবং যার যার দায়িত্ব যথাযথ পালনের মধ্যে জীবনের সুখকর অস্তিত্ব নির্ভরশীল। জীবনের উন্নতির চাবিকাঠি পরিশ্রমের মধ্যে বিদ্যমান। শ্রমের এই অপরিসীম গুরুত্ব বিবেচনায় শ্রমের মর্যাদা দিতে হবে। আজকের বিশ্বের বিপুল অগ্রগতির পেছনে যেমন শ্রমজীবী মানুষের অবদান রয়েছে, তেমনি শ্রমজীবী সমাজের অসহযোগিতা জীবনকে বিষময় করে তুলবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর দিকে লক্ষ করলে দেখা যাবে যে, শ্রমের প্রতি তারা মর্যাদাশীল বলে তাদের উন্নতি এত ব্যাপক হয়েছে। সেসব দেশে ছোট বড় বলে কোনো পার্থক্য নেই। কাজ যাই হোক না কেন তাতে কোনো অমর্যাদা লুকিয়ে থাকে না। কায়িক বা দৈহিক পরিশ্রম সেসব দেশে কখনো কোনো অগৌরব নিয়ে আসে না। তাই সকলেই সব রকম কাজের প্রতি সমান আগ্রহ দেখিয়ে থাকে। জীবনের সাথে শ্রমের একটা নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। মানবজীবনে শ্রমের এই বিশেষ গুরুত্ব দেখাতে গিয়ে কবি বলেছেন-

“চাষী ক্ষেতে চালাইছে হাল,

তাঁতি বসে তাঁত বোনে, জেলে ফেলে জাল,

বহুদূর প্রসারিত এদের বিচিত্র কর্মভার,

তারি’ পরে ভর দিয়ে চলিতেছে সমস্ত সংসার।”

শ্রমের প্রকারভেদ: শ্রম প্রধানত দু প্রকার- দৈহিক বা কায়িক শ্রম ও মানসিক শ্রম। মানবসমাজে দু ধরনের শ্রমেরই মূল্য আছে। যারা দেহ খাটিয়ে পরিশ্রম করে, তাদের শ্রমকে দৈহিক বা কায়িক শ্রম বলে। আর যে শ্রমে বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাভাবনাকে কাজে লাগানো হয়, তাকে বলে মানসিক শ্রম। জীবন পথে চলতে গেলে উভয় প্রকার শ্রমেরই প্রয়োজন রয়েছে।

ভাগ্যরচনা ও প্রতিভা বিকাশে শ্রম : মানুষ একদিকে যেমন সভ্যতার স্রষ্টা, অন্যদিকে তেমনি নিজের ভাগ্যেরও নির্মাতা। নিজের ভাগ্যকে মানুষ নিজেই নির্মাণ করতে পারে। তার ভাগ্য নির্মাণের হাতিয়ার হলো তার পরিশ্রম। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই আছে সুপ্ত প্রতিভা। পৃথিবীতে যে সকল ব্যক্তি প্রতিভাবান বলে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন, তাঁরা আজীবন করেছেন কঠোর পরিশ্রম এবং তার ফলে তাঁদের প্রতিভা ফুলের মতো বিকশিত হয়ে পৃথিবীকে বিতরণ করেছে অনাবিল সৌরভ। পরিশ্রমই মানুষের প্রতিভা বিকাশ ও ভাগ্য গঠনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। গ্রামের এই গুরুত্ব বিবেচনা করেই পাশ্চাত্য মনীষী ঠরৎমরষ বলেছেন, ‘ঞযব ফরমহরঃু ড়ভ ষধনড়ঁৎ সধশবং ধ সধহ ংবষভ-পড়হভরফবহঃ ধহফ যরময ধসনরঃরড়ঁং ঝড়, ঃযব বাধষঁধঃরড়হ ড়ভ ষধনড়ঁৎ রং বংংবহঃরধষ.’

শ্রমিক লাঞ্ছনা: সমাজের উঁচু স্তরের মানুষ যারা, তারা গ্রহণ করেছে সমাজের সম্মানের কাজ, গৌরবের কাজ। সমাজের সমস্ত সুখ-সুবিধা নিজেরা কুক্ষিগত করে তথাকথিত নিম্নশ্রেণির মানুষদের নিক্ষেপ করেছে ঘৃণা ও বঞ্চনার নীরস্ত্র অন্ধকারে। অথচ সেই শ্রমিকেরা চিরকাল মাঠে মাঠে বীজ বুনেছে, ফলিয়েছে সোনার ফসল, তাঁতি বসে তাঁত বুনেছে, জেলে ধরেছে মাছ। অথচ স্বার্থপর সমাজের কাছ থেকে তারাই পায় নি মানুষের মর্যাদা।

সকল ধর্মে শ্রমের মর্যাদা : সকল ধর্মেই শ্রমের মর্যাদাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইসলাম ধর্মে শ্রমের ও শ্রমিকের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। শ্রমের প্রতি শ্রমন্থাশীল হতে ও শ্রমিকদের ঘাম শুকানোর আগেই তার পারিশ্রমিক দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মে কর্মবাদের কথা অর্থাৎ পরিশ্রমের মাধ্যমে সৎ উপার্জনের কথা বলা হয়েছে। খ্রিস্টধর্মে শ্রমহীন বেকার মানুষের মর্যাদা নেই। অন্যান্য ধর্মেও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের অবস্থার পরিবর্তন অর্থাৎ উন্নতি করার কথা বলা হয়েছে। শ্রমের প্রকারভেদ বড় কথা নয়। যে কোনো শ্রমেরই গুরুত্ব ও মর্যাদা সমান।

শ্রমের জয়: শ্রমিক সমাজ আজ বহু সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানবিক শ্রমকে তার যোগ্য মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কালের যাত্রায় একমাত্র তারাই আজ সমাজের রথকে গতি দিতে পারে, একমাত্র তারাই পারে সমাজে কর্মমুখরতার ঢেউ আনতে। তাই আজ শ্রমের জয় বিঘোষিত হচ্ছে দিকে দিকে। শ্রমিক দুনিয়ার প্রতি সকলের দৃষ্টি আজ আকৃষ্ট হয়েছে। দেশে দেশে আজ শ্রমিক সংঘ এবং শ্রমিক কল্যাণ স্বীকৃতি লাভ করেছে। সমাজ কাব্যে উপেক্ষিত এই শ্রমকে তার যোগ্য সম্মান না দিলে যে সমাজের উত্থান নেই, অগ্রগতি নেই-এ কথা আজ সারা বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

বাংলাদেশে শ্রমের স্থান: বাংলাদেশে শ্রমবিভাগ ছিল প্রধানত বর্ণগত। যারা উঁচু বর্ণের তারা কোন কাজ করত না। নিচু বর্ণের লোকেরা দৈহিক বা কায়িক পরিশ্রমের কাজ করত। তাতে সমাজে একটা ধারণা জন্মেছিল যে, যারা শারীরিক পরিশ্রম করে তারা সমাজে সম্মানের পাত্র নয়। এভাবে কায়িক পরিশ্রম আমাদের দেশে অবজ্ঞা পায় এবং আমরা কর্মবিমুখ হয়ে পড়ি। এটাই আমাদের অবনতির মূল কারণ।

শ্রমের সুফল : পরিশ্রম ছাড়া সমাজের কোনো কাজই সম্পাদিত হতে পারে না। সমস্ত কাজই পৃথিবীর কাজ। পৃথিবীতে যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী, সে জাতি ও দেশ তত উন্নত। পৃথিবীর মানুষ হিসেবে সকল কাজই মানুষের করণীয়। তাতে যেমন কাজের কোনো জাতিভেদ নেই, যারা সেই কাজ করে তাদেরও কোনো জাতিভেদ নেই। সুতরাং পরিশ্রম করা মোটেই সম্মান হানিকর নয়। এতে ব্যক্তির আত্মোন্নয়ন যেমন হয়, তেমনি হয় দেশের কল্যাণ। কায়িক ও মানসিক উভয় প্রকার শ্রমের মাধ্যমেই ব্যক্তি এবং জাতি মাথা উঁচু করে চলতে পারে। জাতীয় উন্নয়নে শ্রমের গুরুত্ব অনেক। শ্রমবিমুখ জাতির পতন অনিবার্য। জগতের মহামনীষীরা সকলেই পরিশ্রম করেছেন এবং শ্রমের মর্যাদা দিয়ে গেছেন। জগতের এত যে কীর্তি স্থাপিত হয়েছে তার মূলে রয়েছে মানুষের চিন্তা, পরিশ্রম ও অধ্যবসায়। শ্রমকে ঘৃণার চোখে বিচার করলে দেশে উৎপাদনের জোয়ার আনা যায় না, জাতীয় সমৃদ্ধির স্বপ্ন রচনা করা যায় না। শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হলেই পরিশ্রমের প্রকৃত সুফল পাওয়া সম্ভব। তাই সকল প্রকার শ্রমেরই মর্যাদা নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন । তাহলে যারা শ্রম দেয় তারা আর শ্রমবিমুখ থাকবে না এবং দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।

উপসংহার: জীবনের সর্বক্ষেত্রে শ্রমের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের পরিশ্রমকে কোনো সমাজ কোনো কালেই তার যোগ্য মর্যাদা দেয় নি। যারা সত্যিকার অর্থেই জীবনে সম্মান পেয়েছেন তারা একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে, পরিশ্রমেই জীবনের প্রকৃত আনন্দ। পরিশ্রমই জীবনের অশেষ দুঃখ-কষ্ট হতে মানুষকে মুক্তির সন্ধান দেয়। তাই সকল প্রকার শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন।

 

(খ) জাতিগঠনে নারীসমাজের ভূমিকা

ভূমিকা : আধুনিক জ্ঞানভিত্তিক, উন্নত ও প্রগতিশীল জাতি গঠনে নারীসমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সুদূর অতীতে পরিবার গঠনে এবং কৃষিসভ্যতার সূচনায় নারীরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা শুরুর পর থেকে নারীকে কোনঠাসা করা হলেও তাদের গঠনমূলক ও কল্যাণকর ভূমিকা খুব বেশি সীমিত হয়নি। বরং পুরুষের পাশাপাশি থেকে তারা সভ্যতার অগ্রগতিতে সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণার উৎস হয়েছে। বর্তমানে নারী কেবল স্ত্রী-কন্যা-মা নয়, ব্যক্তিত্ববোধে জাগ্রত স্বতন্ত্র সত্তা। তাই সমাজ উন্নয়নের স্রোতধারায় তাদের ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাতিগঠনে যথাযথ ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি করা সময়েরই জোরালো দাবি।

জাতিগঠনে নারীসমাজের ভূমিকা : জাতিগঠনে নারীসমাজের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। বাঙালি পুরুষের পাশাপশি বাঙালি নারীসমাজও বাঙালি জাতিসত্তা বিনির্মাণে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে আশ্রয় করেই বাঙালি জাতিসত্তা গড়ে উঠেছে। তা শুরু হয়েছে পরিবারের নারীদের উদ্যোগেই। তারা যেমন বাংলা ভাষাকে ধারণ করেছে, তেমনি স্বতন্ত্র সংস্কৃতিকেও ধারণ ও সঞ্চারিত করেছে যুগ যুগ ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসবের মধ্য দিয়েই জাতি অগ্রসর হয়েছে স্ব ভাষা-সংস্কৃতি লালন ও ধারণ করে। বিজাতীয় ভাষার আক্রমণেও মূলত নারীসমাজই তা অক্ষুণ্ণ রেখেছে বারবার। বাঙালি জাতিসত্তার বিস্ফোরণ ও উৎসারণ ঘটেছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে। বিজাতীয় ভাষা জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রকে রুখে দিয়েছে বাঙালি, নারী সমাজকে সাথে নিয়ে। এখানেই বৃহত্তর গুরুত্বের সঙ্গে চোখে বিয়েছে নারীসমাজও জাতিগঠনের সক্রিয় সাথি। এরপর ১৯৫৪, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯-এর আন্দোলনেও নারীর, ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। স্বাধীনতা সংগ্রামে ও মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির মহত্তম স্বার্থে নারীসমাজ জনমত গঠনে, সাংগঠনিক কার্যক্রমে, সেবাপরায়ণতায়, যুদ্ধে অংশ নিয়ে, নিজেদের সম্ভ্রম উৎসর্গ করে জাতিগঠনে নিজেদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। স্বাধীনতার পর দেশের পুনর্গঠনে অবিরাম কাজ করেছে নারীসমাজ। রাস্তাঘাট নির্মাণে, ফসল উৎপাদনে, শিল্পশ্রমিক হিসেবে, শিক্ষা কার্যক্রমে, কুটিরশিল্পে নিয়োজিত হয়ে জাতিগঠনে অবদান রেখেছে। আজকের দিনে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে, ব্যবসায়-বাণিজ্যে, শিল্পকারখানায় নারীর শ্রম ও ত্যাগ আর্থসামাজিক বুনিয়াদ শক্তিশালী করেছে। পুরুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে জাতিগঠনে নারীসমাজের ভূমিকা আজ পূর্বের সাথে স্মরণযোগ্য।

উন্নত দেশে জাতিগঠনে নারী: ইউরোপ-আমেরিকা তথা উন্নত দেশগুলোতে নারীকে উন্নত মর্যাদা দেওয়া হয়। তারা দেশ ও জাতি গঠনে পুরুষের সাথে সমান তালে এগিয়ে চলে। দেশের প্রশাসনের প্রতিটি সেক্টরে যেমন তাদের ব্যাপক অংশগ্রহণ আছে, তেমনি শিল্প-কারখানা, ব্যবসায়- বাণিজ্য, গবেষণা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মহাকাশ অভিযানসহ সবক্ষেত্রেই নারীদের অবাধ অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। শিক্ষাগ্রহণের মাধ্যমে তারা নিজেরাই বেছে নিয়েছে তাদের কর্মক্ষেত্র এবং কর্মনিষ্ঠার মাধ্যমে তারা প্রমাণ করেছে তাদের মেধা ও যোগ্যতা।

জাতিগঠনে নারীর অন্তরায়সমূহ: বাংলাদেশে পুরুষ ও নারীর অনুপাত প্রায় সমান। মোট জনসংখ্যার অর্ধেক হওয়া সত্ত্বেও তারা নানা বৈষম্যের শিকার। এদেশের নারীরা এখনও সমাজের নানা নিয়ম-কানুন, আচার-আচরণের বেড়াজালে বন্দি। আজও তারা শ্রম বৈষম্যের শিকার। পুরুষের সমান শ্রম দেওয়া সত্ত্বেও তাদের পারিশ্রমিক কম। সন্তানহীনতা ও কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য তাদেরকেই দায়ী করা হয়। আজও তারা যৌতুকের জন্য অমানবিক নির্যাতন ভোগ করে। শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও নারীকে পণ্যের মতো ভোগ্যসামগ্রী মনে করা হয়। নারীকে অবমাননা ও অবহেলা করায় দেশ ও জাতিগঠনকে ত্বরান্বিত করতে ও সুষম সমাজব্যবস্থা নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। আজও একশ্রেণির সংকীর্ণচিত্তের মানুষ নারীকে অবরুদ্ধ করে জাতিকে পশ্চাতে ঠেলে দেওয়ার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। এটা সুষম ও প্রগতিশীল সমাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়।

জাতিগঠনে শিক্ষিত নারীর ভূমিকা: নারীসমাজকে পেছনে রেখে সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন কখনো সম্ভব নয়। এজন্য নেপোলিয়ন বলেছিলেন, “আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব। তাই সমাজের সামগ্রিক কল্যাণ ও উন্নতির জন্য শিক্ষিত নারীর একান্ত প্রয়োজন কেননা একটি শিশুর জন্ম, প্রাথমিক শিক্ষা ও বিকাশ সবই শুরু হয় মায়ের সাহচর্যে। একজন সুশিক্ষিত মা তার সন্তানের সুশিক্ষা, নৈতিকতা, চরিত্র গঠনের প্রাথমিক ভিত্তি নির্মাণ নিশ্চিত করতে পারেন। তিনি পরিবারের সবার স্বাস্থ্যরক্ষা, সংসারের আয়-ব্যয়ের হিসাব-নিকাশ, যথাযথ সেবা-যত্ন, জরুরি কাজকর্ম সম্পাদন করের একটা আদর্শ ও উন্নত পরিবার গঠনে পর্যাপ্ত সহায়তা করতে পারেন। শিক্ষিত নারীরা এখন দেশের প্রধানমন্ত্রী, হাইকোর্টের বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাতীয় সংসদের স্পিকার হয়ে জাতিগঠনে সর্বোচ্চ অবদান রাখছেন। এভাবেই আদর্শ সমাজ ও আদর্শ দেশ গঠনের প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই সম্পন্ন হয়।

জাতিগঠনে নারীসমাজের মুক্তি আন্দোলন: এদেশের অধিকারবঞ্চিত অন্তঃপুরবাসিনী নারীদের আধিকারসচেতন করে জাগিয়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন মহীয়সী নারী রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। তিনিই প্রথম নারী-শিক্ষালয় গড়ে তুলে এবং লেখনীর মাধ্যমে নারী জাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন। তাঁরই পথ ধরে নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ধাপে ধাপে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন শামসুর নাহার মাহমুদ, বেগম সুফিয়া কামাল, শহিদ জননী জাহানারা ইমাম, ড. মালেকা বেগম প্রমুখ নারী নেতৃবৃন্দ। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও নারী আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন।

জাতিগঠনে নারীসমাজের বর্তমান অবস্থান : বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগের পর এদেশের নারীসমাজ ভাষা-শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে শুরু করে। একবিংশ শতাব্দীতে এসে নারীর অবস্থান সুদৃঢ় হতে শুরু করেছে। পুরুষের কর্মক্ষেত্রের সর্বত্র নারীরা সমানভাবে অংশগ্রহণ করছে। শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে নয়, প্রশাসনের প্রতিটি বিভাগে, পদাতিক-নৌ-বিমানবাহিনী, পুলিশ ও আনসার বাহিনী, চিকিৎসা ও প্রকৌশল, বিচারবিভাগ, জাতীয় সংসদ এমনকি মন্ত্রিসভায়ও নারীর উপস্থিতি যথার্থই উৎসাহব্যঞ্জক। নারীসমাজ সবচেয়ে বেশি সক্রিয় অবদান রাখছে অর্থনৈতিক উন্নয়নে। এদেশের শিল্প-কারখানা বিশেষ করে পোশাক শিল্পে নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণ এদেশের আর্থ- সামাজিক উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখছে। ব্যাংক-বিমাসহ ব্যবসায়-বাণিজ্যের সব ক্ষেত্রেই নারীর অবস্থান এখন প্রশংসাযোগ্য। বিদেশে চাকরি গ্রহণ করে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রেও নারীসমাজ পিছিয়ে নেই। মোট কথা, শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত নারীসমাজ এখন আর ঘরে বসে থাকছে না। পুরুষের পাশাপাশি তাঁরাও পরিবারের সার্বিক উন্নতি ও অগ্রগতিতে দৃঢ় ভূমিকা গ্রহণ করছে। আর এর ফলে দেশ ও জাতি গঠনে এসেছে বৈপ্লবিক জাগরণ।

জাতিগঠনে নারীর ভূমিকায় সরকারের প্রস্তুতি: দেশ ও জাতি গঠনে নারীসমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকারের ভূমিকা খুবই গঠনমূলক ও উৎসাহব্যঞ্জক। নারীশিক্ষা বিস্তার ও নারীর ক্ষমতায়নকেই এক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ, স্কুল পর্যায়ে মেয়েদের উপবৃত্তি প্রদান, নবম শ্রেণি পর্যন্ত বছরের প্রথমেই বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুস্তক বিতরণ, প্রতিটি জেলা- উপজেলায় মেয়েদের জন্য পৃথক স্কুল ও কলেজ স্থাপন, বয়স্ক নারীদের শিক্ষাদানের জন্য বয়স্ক নারী শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন, বয়স্ক নারীদের ভাতা প্রদান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কিছু কিছু চাকরির ক্ষেত্রে কোটা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এছড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন সংরক্ষিত রয়েছে। সরকার এসবের মাধ্যমে নারীসমাজকে জাতিগঠনে ভূমিকা রাখার জন্য প্রস্তুতি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন।

জাতিগঠনে নারীর অধিক ভূমিকার জন্য করণীয়সমূহ : নারী সমস্যার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধানের স্পষ্ট দিক নির্দেশনা দিতে হবে, যাতে দেশ ও জাতি গঠনে নারীর অংশগ্রহণ আরও বিস্তৃত হয়। যেমন-

১. রাজনীতিতে নারীদের ব্যাপকহারে অংশগ্রহণ করতে হবে।

২. নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও বিস্তৃত করতে হবে।

৩. সংসদে ও মন্ত্রিপরিষদে উল্লেখযোগ্য অনুপাতে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

৪. প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে অধিকহারে ক্যাবিনেট পদসহ মন্ত্রণালয়ে ও অধিদপ্তরসমূহে নারী কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।

৫. পাবলিক সেক্টর ও কর্পোরেশনগুলোতে ২৫ শতাংশ নারী নিয়োগের বিধি প্রচলন করতে হবে।

৬. স্থানীয় সরকারের তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের শিক্ষা ও বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনায় যোগ্য করে তুলতে হবে।

৭. বিনা খরচে নারীদের স্নাতক পর্যন্ত শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

৮. গণশিক্ষা, নারীশিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রমের প্রসার ঘটিয়ে নারীশিক্ষার ব্যাপক বিস্তার ঘটাতে হবে।

উপসংহার: জাতীয় জীবনে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করতে হলে দেশ ও জাতি গঠনে অধিকহারে নারীসমাজের সম্পৃক্ততা অপরিহার্য। এ জন্য নারীর প্রাপ্য মৌলিক অধিকার, তার মর্যাদা এবং তার ক্ষমতায়ন সর্বক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে। পুরুষের সমপর্যায়ে নারী প্রতিষ্ঠিত হলে মানব – সভ্যতাও বিস্ময়করভাবে পরিপুষ্ট হবে। আর এ পর্যায়ে বাঙ্ময় হয়ে উঠবে কবির মহান বাণী-

‘কোনো কালে একা হয়নিকো জয়ী পুরুষের তরবারি

প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে বিজয়লক্ষ্মী নারী।’- কাজী নজরুল ইসলাম

 

(গ) পরিবেশ সংরক্ষণে বনায়ন

‘গাছের ছায়ায় বসে বহুদিন কাটিয়েছি

কোনদিন ধন্যবাদ দিই নি বৃক্ষকে

এখন একটা কোন প্রতিনিধি বৃক্ষ চাই

যার কাছে সব কৃতজ্ঞতা

সমীপেষু করা যায়।’- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

ভূমিকা : বন প্রকৃতি মানুষের নিকটতম প্রতিবেশী। বনভূমিই পৃথিবীর প্রথম আগন্তুক। অরণ্য তার অবারিত শ্যামল ছায়া বিস্তার করে তাকে সূর্যের প্রখর দহনজ্বালা থেকে রক্ষা করেছিল। তার ক্ষুধার্ত মুখে অরণ্যই দিয়েছিল খাদ্য, প্রকৃতির নানা বিরুদ্ধ শক্তির হাত থেকে রক্ষা করবার জন্য দিয়েছিল নিরাপদ আশ্রয়। গভীর অরণ্যের বুকে মানুষ গড়ে তুলেছে চঞ্চল জনপদ। জীবন স্পন্দনে অপূর্ব কোলাহলমুখর সে জনপদ গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে বিস্তৃত হয়েছে। মাঠে মাঠে ফসলের দোলা, কর্মের সমারোহ, আনন্দের জয়ধ্বনি জেগেছে। কৃষি সভ্যতার বুনিয়াদ মজবুত হয়েছে। প্রয়োজন বেড়েছে মানুষের। বনের গাছ কেটে মানুষ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র তৈরি করেছে, ঘরের খুঁটি দিয়েছে। জীবিতকালে গাছ ফুলের সুবাস দেয়, ফল দেয়, অক্সিজেন দেয়, মরণের পরেও সে নানানভাবে মানুষের উপকার করে যায়। পরিবেশ সংরক্ষণে বনায়নের মতো এমন উপকারী আর কিছু নেই।

বনায়নের উদ্দেশ্য : মানুষ আজ অরণ্য বিনাশের মাধ্যমে পৃথিবীতে ডেকে আনছে মরুভূমি। অরণ্যই মরুভূমিকে প্রতিরোধ করতে পারে, অরণ্যই মরুভূমিকে স্নিগ্ধ স্নেহময়ী জননীর মূর্তি দান করতে পারে। বনায়নের মাধ্যমে সম্ভব হয় পরিবেশ সংরক্ষণ ও মরুভূমির বশীকরণ। বনায়নের উদ্দেশ্যই হলো তাই। অরণ্যের তরুশিশুদলকে মানবসমাজের সান্নিধ্যে আহ্বান করাই তার মূল উদ্দেশ্য। জনভূমি ও বনভূমির মধ্যে একদিন ব্যবধান ছিল না। পাশ্চাত্য সভ্যতার নগরকেন্দ্রিকতা অরণ্যকে মাসে করে তার ওপর ইট কাঠ পাথরের কৃত্রিম শোভা স্থাপন করে প্রকৃতপক্ষে মানবজাতির কবরভূমি রচনা করেছে। বনায়নের উদ্দেশ্য এই কবরভূমি থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করে একটা সুন্দর পরিবেশ উপহার দেওয়া। ভাই কবি বলেছেন-‘দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর’

বনভূমি ও মানবজীবন : মানবজীবন ও অরণ্যজীবন প্রাণের এই দুই মহান প্রকাশের মধ্যে বাজে একটিমাত্র ছন্দ। ঋতুচক্রের আবর্তনের পথে উভয়ের একই স্পর্শকাতরতা। বসন্তের দক্ষিণ বাতাসে মানুষ তার হৃদয়ের আনন্দানুভূতিকে চিত্রে, সংগীতে কিংবা কবিতার প্রকাশ করে। আর অরণ্য তার বাসন্তী বেদনাকে প্রকাশ করে অশোক, পলাশ, কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম প্রগলভতায়। উভয়ের আদান প্রদানের সম্পর্কও অতি নিবিড়। এক বিপুল প্রাপ্তিবিলাসের জন্য মানুষ এতদিন তার পরম বন্ধুকে চরম শত্রু মনে করে নির্বোধ ঘাতকের মতো ধ্বংসের পৈশাচিক লালায় মেতে ওঠেছিল। কাজেই, আজ আর বনভূমি ধ্বংস নয়, বনভূমি সৃজনই প্রয়োজন।

বাংলাদেশের বনভূমি: বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি বনায়নের জন্য অত্যন্ত সহায়ক। আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন আছে। যেমন: গাজীপুর জেলার অন্তর্গত ভাওয়ালের গজারি বন, টাঙ্গাইলের মধুপুরের বন, খুলনা বিভাগের অন্তর্গত সুন্দরবন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বনভূমি, কুমিল্লার শালবন বিহার ইত্যাদি। এককালে এসব বনাঞ্চল বড় বড় গাছপালায় পরিপূর্ণ ছিল। বর্তমানে বনভূমি প্রায় উজাড় হওার পথে। এতে পরিবেশগত দিক থেকে বাংলাদেশ ভীষণ সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

 

পরিবেশ ও সামাজিক বনায়ন: পরিবেশ নিঃসন্দেহে মানবধাত্রীর মতো। প্রকৃতি ও মানবচরিত্রের মধ্যে বিরোধ নয়, উভয়ের মধ্যে রয়েছে গভীর আত্মীয়তার সম্পর্ক। এই সম্পর্ককে আরও গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে বিশুদ্ধ পরিবেশ দরকার। তাই পরিবেশ সংরক্ষণের জন্যও বাংলাদেশে বনায়নের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সামাজিকভাবে বনায়ন কর্মসূচি সফল করতে না পারলে মানুষের উপযোগী পরিবেশ সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়।

আমরা জানি, প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্য ২৫ শতাংশ বনভূমি আবশ্যক, কিন্তু বাংলাদেশে বর্তমানে আছে মাত্র ১৩.৪৬ শতাংশ বনভূমি। আমাদের পরিবেশ ও অস্তিত্ব রক্ষার জন্য বনায়ন বৃদ্ধি করা উচিত। তা না হলে আমরা গ্রীন হাউস এফেক্ট-এর করালগ্রাস থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারব না। বৈজ্ঞানিকদের সমীক্ষায় জানা গেছে যে, গ্রীনহাউসের প্রভাবে বাংলাদেশে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বৃদ্ধি পেতে পারে আর তাতে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ২২.৮৮৯ বর্গকিলোমিটার এলাকা পানির নিচে ডুবে যেতে পারে। তাছাড়া আমাদের প্রাণিজগতের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান হলো অক্সিজেন। অক্সিজেন আমরা সাধারণত পেয়ে থাকি গাছপালা বা বনভূমি থেকে। আমাদের দেশের মানুষের জন্য যে পরিমাণ অক্সিজেনের প্রয়োজন, সে পরিমাণ অক্সিজেন পাওয়ার মতো বনভূমি বাংলাদেশে নেই। তাই মানুষের বসবাসের উপযোগী পরিবেশ সংরক্ষণ ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটাবার জন্য আমাদের বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা খুবই দরকার।

সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি সফল করতে হলে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন করতে হবে। বনায়নের জন্য যে শুধু বিশাল বনভূমিকেই বেছে নিতে হবে তা নয়, আমাদের বাড়ির আশেপাশে অনেক অনাবাদী জায়গা থাকে, পুকুরপাড়ে পড়ে থাকে অনেক জায়গা, এসব জায়গায় গাছপালা লাগিয়ে বনায়ন কর্মসূচি পালন করা যায়। তাছাড়া রাস্তার ধারে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশেপাশে ও খেলার মাঠের ধারেও গাছ লাগানো যায়। এসমস্ত কর্মসূচি শুরু হলে সামাজিকভাবে মানুষ উৎসাহিত হবে এবং বনায়নে এগিয়ে আসবে।

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সফল করার উপায় : বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করতে হলে প্রয়োজন পুরাতন গাছকে নির্বিচারে না কাটা এবং নতুন গাছের চারা লাগানো। নতুন করে গাছ লাগাতে বা রোপণ করতে হলে প্রয়োজন চারার সকল ধরনের গাছের চারা সংগ্রহ করা খুবই কঠিন কাজ। কারণ, গাছের চারা কোনোটা হয় ফল থেকে, কোনোটা বীজ থেকে, আবার কোনোটা হয় ডাল থেকে কলমের মাধ্যমে। এরূপ চারা সাধারণ মানুষের পক্ষে সংগ্রহ করা কঠিন কাজই বটে। তাই এই সংগ্রহের কাজ করতে হবে সরকারের নিজস্ব বিভাগগুলোকে। সরকার যদি এই চারা সংগ্রহ করে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করে, তা হলে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সফল করা সম্ভব। তাছাড়া গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে, উৎসাহিত করতে হবে।

বনাঞ্চল কমে যাওয়ার পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য পরিকল্পিত উপায়ে বৃক্ষরোপণ করে সমস্যার সমাধান করতে হবে। চারা রোপণের নিয়ম – কানুন ও পরিচর্যা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমের সাহায্যে জনগণকে অবহিত করতে হবে। সাম্প্রতিককালে বৃক্ষমেলা আয়োজনের মাধ্যমে গাছের চারা সবার কাছে সহজলভ্য হচ্ছে। প্রত্যেকের বাড়ির পাশের অনাবাদি জায়গায়, পুকুর পাড়ে, রাস্তার পাশে, স্কুলের পতিত জায়গায় বৃক্ষরোপণ করতে হবে। ছাত্র-শিক্ষকসহ সকল স্তরের জনগণের মধ্যে যদি বৃক্ষরোপণের উৎসাহ-উদ্দীপনা ও জাগরণ ঘটানো যায়, তাহলে বৃক্ষরোপণ অভিযান সফল হবে বলে আশা করা যায়।

বনায়নের উপকারিতা : বনভূমি সূর্যের প্রখর কিরণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রকৃতির শোভাবর্ধন করে। প্রয়োজনীয় কাঠ সরবরাহ করে বনভূমি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের চাহিদা মিটিয়ে থাকে।

প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে বনভূমির অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গাছপালা বায়ুর অঙ্গার কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস গ্রহণ করে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিজের খাদ্য তৈরি করে ও বিশুদ্ধ অক্সিজেন গ্যাস বাতাসে ছেড়ে দেয়। এই অক্সিজেন আমাদের জীবনধারণের জন্য একান্ত অপরিহার্য। গাছপালা না থাকলে বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেত এবং অক্সিজেনের অভাবে প্রাণী মারা যেত। একমাত্র গাছপালা বা বনায়নই আমাদের জীবনধারণের সুস্থ পরিবেশের নিশ্চয়তা দান করে। তাছাড়া গাছপালা শুধু ছায়া ও শোভাই বিস্তার করে না, ফুল, ফল দান করে এবং প্রয়োজনীয় কাঠ সরবরাহ করে আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। গাছ আমাদের উপাদেয় খাদ্য ও অর্থকরী ফল সরবরাহ করে থাকে। তাই বনায়নের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

উপসংহার : আজ আর বনভূমি ধ্বংন নয়, বনভূমি সৃজনই প্রয়োজন। স্নিগ্ধ, শীতল ছায়া এবং প্রাণের উৎস অম্লজান থেকে আরম্ভ করে খাদ্য, বাসগৃহ, ঔষধপত্র পর্যন্ত সবই অরণ্যের অবদান। অরণ্য ছাড়া পৃথিবী পরিণত হতো মরুভূমিতে। অরণ্যই প্রাণের অগ্রদূত। বিজ্ঞাননির্ভর যান্ত্রিক সভ্যতার ক্রমবিস্তার এবং অরণ্য সংহারে প্রাকৃতিক আবহাওয়ার যে ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এখন বনায়নই তার একমাত্র প্রতিকার।

 

Related Posts

তৃতীয় শ্রেণি

সকল সাবজেক্টের অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান ও পরীক্ষা প্রস্তুতি

চতুর্থ শ্রেণি

সকল সাবজেক্টের অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান ও পরীক্ষা প্রস্তুতি

পঞ্চম শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান ও বৃত্তি পরীক্ষা প্রস্তুতি

ষষ্ঠ শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সৃজনশীল, জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক ও বহুনির্বাচনি

সপ্তম শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সৃজনশীল, জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক ও বহুনির্বাচনি

অষ্টম শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান ও জেএসসি পরীক্ষা প্রস্তুতি

নবম-দশম শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান, মডেল টেস্ট ও এসএসসি পরীক্ষা প্রস্তুতি

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান, মডেল টেস্ট ও এসএসসি পরীক্ষা প্রস্তুতি

এসএসসি/SSC ২০২৫ পরীক্ষার্থীদের জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্র(লিখিত অংশ)পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস অনুযায়ী উত্তরসহ মডেল টেস্ট

এইচ এস সি বাংলা ১ম তৈলচিত্রের ভূত গল্পের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন : বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ও উত্তর

READ ALSO এইচ এস সি বাংলা ১ম তৈলচিত্রের ভূত গল্পের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন : বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

Read More »

এইচএসসি-২০২৪, পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী বাংলা প্রথম পত্র, অধ্যায়: আমার পথ (কাজী নজরুল ইসলাম)অধ্যায়ভিত্তিক জ্ঞানমূলক প্রশ্নের সাজেশন

এইচএসসি-২০২৪, পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী বাংলা প্রথম পত্র, অধ্যায়: আমার পথ (কাজী নজরুল ইসলাম)অধ্যায়ভিত্তিক জ্ঞানমূলক প্রশ্নের

Read More »

এইচএসসি-২০২৫ পরীক্ষা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (৩য় অধ্যায়)প্রস্তুতির পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট-১ (বহুনির্বাচনী অংশ)

এইচএসসি-২০২৫ পরীক্ষা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (৩য় অধ্যায়)প্রস্তুতির পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট-১ (বহুনির্বাচনী অংশ) বিষয়: তথ্য

Read More »

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.