Sunday, March 9, 2025

ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতি বাংলা সাজেশন ও সমাধান।

সকল  শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, Eduexplain আজ আমরা ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতির  আলোচনা করব। এখানে তোমরা ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতির উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তোমরা যারা ষষ্ঠ /সপ্তম শ্রেণিতে তোমাদের জন্য  আজকের এই আয়োজন ।যারা বাসায় বসে  ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতিকে আরো জোরদার করতে চাও । নির্ভুল ও সকল শিট একসাথে  Word file / pdf  পেতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আমাদের দেওয়া WhatsApp number এ।

যা তোমরা পিডিএফ হ্যান্ডনোট আকারে সংগ্রহ করতে পারবে। তাহলে চলো, শুরু করি।

READ ALSO

ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতি বাংলা সাজেশন ও সমাধান।

ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতি গণিত সাজেশন

বাংলা ভাষার প্রাথমিক আলোচনা

  • মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যমকে বলা হয় ভাষা।

  • বাঙালি জনগোষ্ঠি যে ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করে তার নাম বাংলা ভাষা।

  • বাংলা ভাষায় কথা বলে প্রায় ত্রিশ কোটি মানুষ।

  • মাতৃভাষা বা জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলা ভাষার অবস্থান ৬ষ্ঠ।

  • পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষ কথা বলে চীনের মান্দারিন ভাষায়।

  • বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে প্রাকৃত ভাষা থেকে। প্রাকৃত অর্থ স্বাভাবিক।

  • বাংলা ভাষার আদি ভাষা গোষ্ঠির নাম ইন্দো-ইউরোপীয়।

  • বাংলা ভাষার প্রাচীনতম লিখিত নিদর্শন চর্যাপদ।

  • বাংলা ভাষার নিজস্ব লিপি রয়েছে। এই লিপির নাম বাংলা লিপি।

  • বাংলা লিপির উদ্বব ঘটেছে ব্রাক্ষীলিপি থেকে।

  • প্রায় সব ভাষায় দুটি রীতি থাকেঃ-

১। মৌখিক/কথ্য ভাষা রীতিঃ এই ভাষায় মূলত লেখার রীতি নেই বললে চলে। শুধু মুখ দিয়ে প্রকাশ করা হয়। যেমন-আঞ্চলিক বা উপভাষা।

২। লিখিত বা লেখ্য ভাষা রীতিঃ মানুষ তার প্রয়োজনে ভাষার লিখিত রূপ আবিষ্কার করে।

ভাষার লিখন ব্যবস্থা প্রধানত তিন প্রকার-

ক. বর্ণ ভিত্তিক- বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি।

খ. অক্ষর ভিত্তিক- জাপানি ভাষা।

গ. ভাবাত্নক- চীন ও কোরিয়ান ভাষা।

ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতি গণিত সাজেশন

  • বাংলা ভাষার লিখিত রূপের দুটি রীতি- সাধু ও চলিত।

১. সাধু- সাধু ভাষার জনক ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮০০ সালে)।

বৈশিষ্ট্যঃ সাধু ভাষায় সর্বনাম ও ক্রিয়া পদের পূর্ণ রূপ ব্যবহার হয়।

সাধু ভাষা তৎসম শব্দবহুল। সাধুভাষা বক্তব্য ও নাটকে ব্যবহারের উপযোগী।

২. চলিত- চলিত ভাষার জনক প্রমথ চৌধুরি (১৯১৪ সাল)।

বৈশিষ্ট্যঃ চলিত ভাষায় সর্বনাম ও ক্রিয়া পদের সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার হয়।

চলিত ভাষা তদ্ভব শব্দ বহুল। চলিত ভাষা বক্তব্য ও নাটকে ব্যবহারের উপযোগী।

ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধান

ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতি গণিত সাজেশন

  • ণ-ত্ব বিধানঃ তৎসম শব্দে ণ-এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মকে ণ-ত্ব বিধান বলে।

  • তৎসম শব্দে ঋ (রেফ, ফলা) এবং ষ-এর পরে ‘ণ’ বসে।

যেমন- ঋণ, তৃণ, মরণ, বর্ণ ইত্যাদি।

  • ট, ঠ, ড- এই বর্ণগুলোর আগে যুক্তবর্ণে ণ বসে।

যেমন- কণ্টক, লুণ্ঠন, মণ্ডপ ইত্যাদি।

  • প্র, পরি, নির- এই তিনটি উপসর্গের পর ণ বসে।

যেমন- প্রণাম, পরিণাম, নির্ণয়।

  • উত্তর, চন্দ্র, পর, রাম- প্রভূতি শব্দের পরী অয়ন/আয়ন প্রত্যয় যুক্ত থাকলে শেষে

ণ বসে। যেমন- উত্তরায়ণ, চন্দ্রায়ণ, পরায়ণ, রামায়ণ।

ণ-ত্ব বিধানের ব্যতিক্রমঃ

  • ত- বর্গীয় বর্ণের আগে (ণ) না বসে (ন) বসে।

যেমন- কান্ত, অন্ত, গ্রন্থ ইত্যাদি।

  • তদ্বব/দেশি শব্দে ন(দন্ত) বসে।

যেমন- সোনা, বামুন, কান ইত্যাদি।

  • বাংলা ক্রিয়া পদের শেষে দন্ত-ন বসে।

যেমন- করেন, ধরেন ইত্যাদি।

  • কিছু শব্দের স্বভাবতই মূর্ধন্য-ণ বসে, কারণ শব্দগুল তৎসম।

যেমন- চাণক্য, মাণিক্য, গণ, বাণিজ্য, লবণ, মণ, বেণু, বীণা।

  • ষ-ত্ব বিধানঃ তৎসম শব্দে ষ-এর সঠিক ব্যবহারকে ষ-ত্ব বিধান বলে।

ষ-এর নিয়ম গুলো হলো-

  • তৎসম শব্দে ঋ,র, এর পরে ‘ষ’ বসে।

যেমন-ঋষি, বৃষ্টি, বর্ষণ, বর্ষা ইত্যাদি।

  • ট ও ঠ এর আগে ষ বসে।

যেমন- নষ্ট, কষ্ট, স্পষ্ট ইত্যাদি।

  • ই-কারান্ত ও উ-কারান্ত উপসর্গের পরে ষ বসে।

ই- অভিষেক, প্রতিষেধক।

উ- সুষম, অনুষ্ঠান।

  • ‘সাৎ’ প্রত্যয় যুক্ত শব্দে ‘ষ’ না হয়ে ‘স’ হয়।

যেমন- অগ্নিসাৎ, ধুলিসাৎ।

  • দেশি-বিদেশি শব্দে ‘ষ’ বসে না, ‘স’ বসে।

যেমন- স্টেশন, স্কুল, করিস, ধরিস ইত্যাদি।

  • কছু শব্দে বিশেষ নিয়মে স্বভাবতই ‘ষ’ বসে।

যেমন- আষঢ়, কলুষ, উষা, সরিষা, পৌষ ইত্যাদি।

ব্যঞ্জনধ্বনিঃ

  • যে ধ্বনি স্বরধ্বনির সাহায্যে নিয়ে উচ্চারিত হয় তাকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে।

অথবা যে ধ্বনি উচ্চারণে মুখে বিভিন্নস্থানে বাধা পায় তাকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে।

  • ব্যঞ্জনধ্বনির লিখিত রুপকে ব্যজ্ঞনধ্বনি বলে।

  • ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯ টি ।

  • ব্যঞ্জনধ্বনি ৩২ টি।

  • মৌলিক ব্যঞ্জনধ্বনি ৩০ টি।

  • ব্যঞ্জনধ্বনি সংক্ষিপ্ত রূপকে ফলা বলে।

  • ফলা ৬ প্রকার ।(যমের, লবন)

য = য ফলা = অন্য।

ম = ম ফলা = স্মরন।

র = র ফলা = ব্রত ।

ল = ল ফলা = রামাল্ল, আল্লাহ।

ব = ব ফলা = স্বজন।

ন = ন ফলা = অন্ন ।

  • ব্যঞ্জনবর্ণের বিকল্প রূপের নাম অনুবর্ণ।

  • মাত্রাহীন ব্যজ্ঞন = ৬ টি (ঙ, ঞ্‌, ৎ, ং, ঃ, ঁ)

  • অর্ধমাত্রা ব্যঞ্জন = ৭টি (ছন্দ, গেন পশ করে পড়ে হল।)

  • বাকি ২৬ টি ব্যঞ্জনবর্ণ পূর্ণ্মাত্রা।

ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতি গণিত সাজেশন

  • ক – ম থেকে ২৫ টি বর্ণকে স্পর্শ বর্ণ বলে।

অঘোষ

ঘোষ

নাসিক্য

অল্পপ্রাণ

মহাপ্রাণ

অল্পপ্রাণ

মহাপ্রাণ

অল্পপ্রাণ

শ, ষ, স

  • ঘোষ বর্ণঃ যে ব্যঞ্জন বর্ণের উচ্চারণে কম্পন বেশি অনুভূত হয় তাকে ঘোষ ব্যঞ্জন বলে।

  • অঘোষ বর্ণঃ যে ব্যঞ্জন বর্ণের উচ্চারণে কম্পন কম অনুভূত হয় তাকে অঘোষ ব্যঞ্জন বলে।

  • মহাপ্রাণঃ যে ব্যঞ্জন ধ্বনি উচ্চারণে বাতাসের চাপ বেশি তাকে মহাপ্রাণ বলে।

  • অল্পপ্রাণঃ যে ব্যঞ্জন ধ্বনি উচ্চারণে বাতাসের চাপ কম থাকে তাকে অল্পপ্রাণ বলে।

  • উচ্চারণের স্থান অনুযায়ী বাংলা ব্যঞ্জনধ্বনির বিভাজন দেখানো হলোঃ

উচ্চারণ স্থান

ব্যঞ্জনধ্বনি

উচ্চারণস্থান অনুযায়ী নাম

জিহবামূল

ক খ গ ঘ ঙ হ

কন্ঠ্য বা জিহবামূলীয় বর্ণ

অগ্রতালু

চ ছ জ ঝ ঞ শ য় য

তালব্য বর্ণ

পশ্চাৎ দন্তমূল

ট ঠ ড ঢ ণ ষ র ড় ঢ়

মূর্ধন্য বা পশ্চাৎ দন্তমূলীয় বর্ণ

অগ্র দন্তমূল

ত থ দ ধ ন ল

দন্ত্য বর্ণ

ওষ্ঠ

প ফ ব ভ ম

ওষ্ঠ বর্ণ

  • অন্তঃধ্বনিঃ য র ল ব – এ ধ্বনিগুলোকে অন্তঃস্থ ধ্বনি বলা হয় আর বর্ণগুলোকে বলা হয় অন্তঃস্থ বর্ণ।

  • উষ্মবর্ণ বা শিশ্‌ বর্ণ ৪ টি –শ ষ স হ কিন্তু উষ্ম বা শিশ্‌ ধ্বনি ৩ টি শ স হ।

  • পাশ্বিকবর্ণ ল ।

  • কম্পনজাত বর্ণ র।

  • তাড়িত বা তাড়নজাত ড় ঢ়।

  • পরাশ্রয়ী ং, ঃ, ঁ।

  • তরল বা নৈকট্যমুলক য়্‌ ব্‌ ।

  • বিসর্গঃ – হ এর প্রাপ্ত উচ্চারণ। যেমন বাঃ – বাহ্‌ ।

ধ্বনি ও বর্ণ

ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতি ইংরেজি

  • ভাষার ক্ষুদ্রতম একককে ধ্বনি বলে।

  • বাংলা ভাষায় ধ্বনি ২ প্রকার ।

(i)স্বর ধ্বনি (ii) ব্যঞ্জন ধ্বনি

  • স্বরধ্বনিঃ যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় মুখের কোথাও বাধা পায় না সেগুলোকে স্বরধ্বনি বলে।

  • স্বরধ্বনির প্রতিককে স্বরবর্ণ বলা হয়। স্বরবর্ণ (১১ টি) ।

  • স্বরবর্নের শ্রেণিবিভাগঃ

  • উচ্চারণের সময় অনুসারে স্বরবর্ণ ২ প্রকার ।

(i)হ্রস্বস্বর–> অ, ই, উ, ঋ (৪)

(ii)দীর্ঘস্বর–> আ, ঈ, ঊ, এ, ও, ঔ (৭)

  • গঠন অনুযায়ী অনুসারে স্বরধ্বনি ২ প্রকার।

(i)মৌলক স্বরধ্বনিঃ অ, আ, ই, উ, এ, ও, অ্যা (৭)

(ii)যৌগিক স্বরজ্ঞাপক বর্ণ/সন্ধিস্বর/দ্বিস্বরঃ অ + ই (ঐ) (অ+উ) = ঔ (২টি)

  • বর্ণের উপর রেখাকে মাত্রা বলে । মাত্রা ৩ প্রকার ।

(i) পূর্ণমাত্রা        (ii) অর্ধমাত্রা      (iii) মাত্রাহীন

অ আ ই ঈ উ ঊ               ঋ             এ ঐ ও ঔ

  • স্বরবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে কার বলে । কার ১০ টি ।

  • অ বর্ণটির সংক্ষিপ্ত রূপ নেই –

  • অ কে নীলিন বর্ণ বলে।

  • মৌলিক স্বরধ্বনি গুলোর উপর ঁ দিলো অনুনাসিক স্বরধ্বনি হয় ।

উচ্চারণ প্রক্রিয়াঃ

  • স্বর বর্ণের উচ্চারণঃ

অ, আ –> কষ্ঠ্য

ই, ঈ –> তালু

উ, ঊ –> ওষ্ঠ

ঋ     –> মূর্ধা

এ, ঐ –> কষ্ঠ্য + তালু

ও ঔ –> কন্ঠ + ওষ্ঠ

  • স্বরধ্বনি উচ্চারণে ৩ বিষয় লক্ষণীয়ঃ

  • জিভের অবস্থা         ৩।সম্মুখ, মধ্য, পশ্চাৎ

  • জিভের উচ্চতা ৪ উচ্চ, উচ্চ মধ্য, নিম্ন মধ্য, নিম্ন

  • ঠোঁটের আকৃতি  ২ ।গোলাকৃত, অগোলাকৃত

সম্মুক

মধ্য

পশ্চাৎ

অ্যা

  • জিভের উচ্চারণ অনুযায়ীঃ

উচ্চ         ই                                         উ          সংবৃত

উচ্চ মধ্য   এ                                        ও          অর্ধসংবৃত

নিম্ন মধ্য   অ্যাঁ                                      অ          অর্ধবিবৃত

নিম্ন                                        আ                     বিবৃত

নোটঃ যে সব স্বরধ্বনি সম্পূর্ণভাবে উচ্চারিত হয় না তাকে অর্ধস্বরধ্বনি বলে। বাংলা ভাষায় অর্ধস্বরধ্বনি (৪টি) [ই], [উ], এ এবং [ও]

শব্দের শ্রেণি

  • পদঃ বাক্য ব্যবহুত বিভক্তিযুক্ত শব্দ ও ধাতুকে পদ বলে । শব্দ যখন বাক্যে ব্যবহুত হয়, তখন তাকে পদ বলে।

  • বাক্যের অন্তর্গত এসব শব্দ বা পদকে মোট আটটি শ্রেণিতে ভাগ করে বর্ণ্না করা যায়।

যথাঃ     ১. বিশেষ্য

            ২. বিশেষণ

            ৩. সর্বনাম

            ৪. ক্রিয়া

            ৫. ক্রিয়াবিশেষণ

            ৬. অনুসর্গ

            ৭. যোজক

            ৮. আবেগ

বিশেষ্য

ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতি ইংরেজি

  • যেসব শব্দ দিয়ে ব্যক্তি, প্রাণী, স্থান, বস্তু, ধারণা ও গুনের নাম বোঝায়, সেগুলোকে বিশেষ্য বলে ।

যেমন- সুকান্ত, গরু, ইট, পাবনা, ভোজন, গমন ইত্যাদি ।

বিশেষ্যের শ্রেণিবিভাগঃ

  • বিশেষ্য সাধারণ ছয় প্রকারঃ ১. নাম-বিশেষ্য,

  ২. জাতি-বিশেষ্য,

  ৩. বস্তু-বিশেষ্য,

  ৪. সমষ্টি-বিশেষ্য

  ৫. গুণ- বিশেষ্য এবং

  ৬. ক্রিয়া-বিশেষ্য ।

      ১. নাম-বিশেষ্যঃ ব্যক্তি, স্থান, দেশ, কাল, সৃষ্টি প্রভৃতির সুনির্দিষ্ট নামকে নাম-বিশেষ্য বলা হয়।

            যেমন-

  • ব্যক্তিনামঃ পলাশ, আকাশ, স্বর্ণা, মনি ।

  • স্থাননামঃ রাজশাহী, বাংলাদেশ, হিমায়ল, মেঘনা ।

  • কালনামঃ ফাল্গুন, জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার ।

  • সৃষ্টিনামঃ গীতাঞ্জলি, বিষাদসিন্ধু, প্রথম আলো ।

২. জাতি-বিশষ্যঃ জাতি-বিশেষ্য সাধারণ-বিশেষ্য নামেও পরিচিত। এ ধরনের বিশেষ্য নির্দিষ্ট কোনো নামকে না বুঝিয়ে প্রাণী ও অপ্রাণী সাধারণ নামকে বোঝায়। যেমন- মানুষ, গরু, ছাগল, ফুল, ফল, নদী, সাগর, পর্বত ইত্যাদি।

৩. বস্তু-বিশেষ্যঃ কোনো দ্রব্য বা বস্তুর নামকে বস্তু-বিশেষ্য বলে। যেমন- ইট, কলম, চিনি, লবণ, আকাশ, টেবিল, বই ইত্যাদি।

৪. সমষ্টি-বিশেষ্যঃ এ ধরনের বিশেষ্য দিয়ে ব্যক্তি বা প্রাণীর সমষ্টিকে বোঝায়। যেমন- জনতা, পরিবার, ঝাঁক, বাহিনী, মিছিল ইত্যাদি।

৫. গুণ-বিশেষ্যঃ গুণগত অবস্থা ও ধারণার নামকে গুণ-বিশেষ্য বলে। যেমন- সরলতা, দয়া, আনন্দ, গুরুত্ব, দীনতা, ধৈর্য ইত্যাদি।

৬. ক্রিয়া-বিশেষ্যঃ যে বিশেষ্য দিয়ে কোনো ক্রিয়া বা কাজের নাম বোঝায়, তাকে ক্রিয়া-বিশেষ্য বলে। যেমন- পঠন, ভোজন, শয়ন, করা, করানো, পড়ানো, নেওয়া ইত্যাদি।

বিশেষণ

বিশেষণঃ যে পদ বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ পদ বলে।

  • চলন্ত ঘোড়াঃ বিশেষ্যের বিশেষণ

  • করুনাময় তুমিঃ সর্বনামের বিশেষণ।

  • আস্তে চলঃ ক্রিয়া বিশেষণ ।

  • বিশেষণ দুইভাগে বিভক্ত ।

যথা-

১. নাম বিশেষণ ও

২. ভাব বিশেষণ।

  • নাম বিশেষণঃ যে বিশেষণ পদ কোনো বিশেষ্য বা সর্বনাম পদকে বিশেষিত করে, তাকে নাম বিশেষণ বলে।

যথা- বিশেষ্যের বিশেষণঃ             সুস্থ সবল দেহ কে না ভালোবাসে?

সর্বনামের বিশেষণঃ                     সে রূপবান ও গুণবান।

  • নাম বিশেষণের প্রকারভেদঃ

১. রূপবাচক/বর্ণবাচকঃ           নীল আকাশ, সবুজ মাঠ, কালো মেঘ।

২. গুণবাচকঃ                        চৌকস লোক, দক্ষ কারিগর, ঠান্ডা হাওয়া।

৩. অবস্থাবাচকঃ                    তাজা মাছ, রোগা ছেলে, খোঁড়া পা।

৪. সংখ্যাবাচকঃ                     হাজার লোক, দশ দশা, শ টাকা।

৫. ক্রমবাচকঃ                       দশম শ্রেণি, সত্তম পৃষ্ঠা, প্রথমা কন্যা।

৬. পরিমাণবাচকঃ                  বিঘাটেক জমি, পাঁচ শতাংশ ভূমি, হাজার টনী জাহাজ, এক কেজি চাল, দু কিলোমিটার রাস্তা।

৭. অংশবাচকঃ                      অর্ধেক সম্পত্তি, ষোল আনা দখল, সিকি পথ।

৮. উপাদানবাচকঃ                  বেলে মাটি, মেটে কলসি, পাথুরে মূর্তি।

৯. প্রশ্নবাচকঃ                        কতদূর পথ? কেমন অবস্থা?

১০. নির্দিষ্টতাজ্ঞাপকঃ              এই লোক, সেই ছেলে, ছাব্বিশে মার্চ।

ক্রিয়াঃ যে পদ দ্বারা কোনো কিছু করা হওয়া বা ঘটা ইত্যাদি নির্দেশ করা হয় তাকে ক্রিয়া বলে।

যেমন- বৃষ্টি হতে পারে। ফুল ফোটে

  • ক্রিয়ামূল বা ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হয়ে ক্রিয়া পদ গঠিত হয়।

যেমন- পড় +ই = পড়ি, পড় + এ = পড়ে, পড় + ছে = পড়ছে।

      ক্রিয়া পদ বাক্যগঠনের অপরিহার্য অঙ্গঃ

      যে বাক্যে ক্রিয়া পদ দেখা যায় না সেখানে অনুক্ত ক্রিয়া লুকিয়ে থাকে। অনুক্ত ক্রিয়ায় হ এবং আছ ধাতু থাকে।

  • ক্রিয়ার প্রকারভেদঃ ভাবপ্রকাশের দিক দিয়ে, বাক্যে কর্মের উপস্থিতির এবং গঠন বিবেচনায় ক্রিয়াকে নানা ভাগে ভাগ করা হয়।

ক. ভাবপ্রকাশের দিক দিয়ে ক্রিয়া দুই প্রকার।

১. সমাপিকা ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়া দিয়ে ভাব সম্পূর্ণ হয়, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।

     যেমন- রহিম ভাত খায়। বাগানে ফুল ফুটেছে।

২.অসমাপিকা ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়া ভাব সম্পূর্ণ করতে পারে না, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।

     যেমন- ভালো করে —।

      পড়াশুনা করলে —।

অসমাপিকা ক্রিয়া তিন ধরনেরঃ ১. ভূত অসমাপিকা, ২. ভাবী অসমাপিকা এবং ৩. শর্ত অসমাপিকা।

     ১. ভূত অসমাপিকাঃ সে গান করে আনন্দ পায়।

      ২. ভাবী অসমাপিকাঃ সে গান শিখতে রাজশাহী যায়।

      ৩. শর্ত অসমাপিকাঃ গান করলে তার মন ভালো হয়।

খ. বাক্যের মধ্যে কর্মের উপস্থিতির ক্রিয়া তিন প্রকার।

১. অকর্মক ক্রিয়াঃ বাক্যে ক্রিয়ার কোনো কর্ম না থাকলে সেই ক্রিয়াকে অকর্মক ক্রিয়া বলে।

     যেমন- সে ঘুমায়। [এই বাক্যে কোনো কর্ম নেই।]

২. সকর্মক ক্রিয়াঃ বাক্যের মধ্যে ক্রিয়ার কর্ম থাকলে সেই ক্রিয়াকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। (এখানে ক্রিয়াকে কী দিয়ে প্রশ্ন করতে হবে।)

     যেমন-সে বই পড়ছে।

৩. দ্বিকর্মক ক্রিয়াঃ বাক্যের মধ্যে ক্রিয়ার দুটি কর্ম থাকলে সেই ক্রিয়াকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। (এখানে ক্রিয়াকে কী এবং কাকে দিয়ে প্রশ্ন করতে হবে।)

     যেমন- শিক্ষক ছাত্রকে বই দিলেন।

গ. গঠন বিবেচনায় ক্রিয়া পাঁচ প্রকার।

১. সরল ক্রিয়াঃ একটিমাত্র পদ দিয়ে যে ক্রিয়া গঠিত হয় এবং এককভাবে ক্রিয়াটি সম্পন্ন করে, তাকে সরল ক্রিয়া বলে। যেমন- সে লিখছে। / ছেলেরা মাঠে খেলছে।

২. প্রযোজক ক্রিয়াঃ কর্তা অন্যকে দিয়ে কাজ করলে তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে।

যেমন- তিনি আমাকে অঙ্ক করাচ্ছেন; রাখাল গরুকে ঘাস খাওয়ান- এখানে ‘করাচ্ছেন’ ও ‘খাওয়ায়’ প্রযোজক ক্রিয়া বলে।

৩. নামক্রিয়াঃ বিশেষ্য, বিশেষণ বা ধ্বন্যাত্নক শব্দের শেষে – আ বা- আনো প্রত্যয় যুক্ত হয়ে যে ক্রিয়া গঠিত হয়, তাকে নামক্রিয়া বলে। যেমন- বিশেয্য চমক শব্দের সঙ্গে – আনো যুক্ত হয়ে হয় চমকানোঃ আকাশে বিদ্যুৎ চমকায়; ধ্বন্যত্নক ছটফট শব্দের সঙ্গে – আনো যুক্ত হয়ে হয় ছটফটানো।

৪. সংযোগ ক্রিয়া/মিশ্রক্রিয়াঃ বিশেষ্য, বিশেষণ বা ধ্বন্যাত্নক শব্দের পরে করা, কাটা, হওয়া, দেওয়া, ধরা, পাওয়া, খাওয়া, মারা প্রভূতি ক্রিয়া যুক্ত হয়ে সংযোগ ক্রিয়া গঠিত হয়। করা ক্রিয়া যোগেঃ গান করা, রাজি হওয়াঃ কথা দেওয়াঃ উঁকি মারা, পকেট মারা, মার খাওয়া, মরচে ধরা, ক্যাচ ধরা; পাওয়া ক্রিয়া যোগেঃ লজ্জা পাওয়া, কষ্ট পাওয়া, উঁকি মারা, পকেট মারা।

৫. যৌগিক ক্রিয়াঃ অসমাপিকা ক্রিয়ার সঙ্গে সমাপিকা ক্রিয়া যুক্ত হয়ে যখন একটি ক্রিয়া গঠন করে তখন তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। যেমন- সাইরেন বেজে উঠলো। ছেলে মেয়েরা শুয়ে পড়লো। ঘটনাটা শুনে রাখ। সরে দাঁড়ানো।

সমধাতুজ কর্মঃ বাক্যে ক্রিয়া ও কর্ম্ পদ একই ধাতু থেকে গঠিত হলে ঐ কর্মপদকে সমধাতুজ কর্ম বলে।

ক্রিয়া বিশেষণঃ যে শব্দ/পদ ক্রিয়াকে বিশেষিত করে, তাকে ক্রিয়া বিশেষণ বলে।

              যেমন- আস্তে খাও।

                  লোকটি ধিরে হাটে।

গঠন বিবেচনায় ক্রিয়া বিশেষণকে/একপদী ও বহুপদী- এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

একপদী ক্রিয়াবিশেষণঃ আস্তে, জোরে, চেঁচিয়ে, সহজে, ভালোভাবে ইত্যাদি।

বহুপদী ক্রিয়াবিশেষণঃ আস্তে আস্তে, ভয়ে ভয়ে, জোরে জোরে, চুপি চুপি।

ক্রিয়াবিশেষণকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ

১. ধরনবাচক ক্রিয়াবিশেষণঃ কোনো ক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হয়, ধরনবাচক ক্রিয়াবিশেষণ তা নির্দেশ করে।

      যেমন- টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ছে।

      ঠিকভাবে চললে কেউ কিছু বলবে না।

২. কালবাচক ক্রিয়াবিশেষণঃ এই ধরনের ক্রিয়াবিশেষণ ক্রিয়া সম্পাদনের কাল নির্দেশ করে।

যেমন- আজকাল ফলের চেয়ে ফুলের দাম বেশি।

যথাসময়ে সে হাজির হয়।

  • ভাব বিশেষণঃ যে পদ বিশেষ্য ও সর্বনাম ভিন্ন অন্য পদকে বিশেষিত করে তা-ই ভাব বিশেষণ।

ভাব বিশেষণ চার প্রকার।

যথা-১. ক্রিয়া বিশেষণ ২. বিশেষণ বা বিশেষণীয় বিশেষণ ৩. অব্যয়ের বিশেষণ ৪. বাক্যের বিশেষণ।

বিশেষণ পদ

ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতি ইংরেজি

 ১. নাম বিশেষণ                                       ২. ভাব বিশেষণ

 ১. ক্রিয়া বিশেষণ             ২. বিশেষণের বিশেষণ      ৩. অব্যয়ের বিশেষণ        ৪. বাক্যের বিশেষণ

     ১. ক্রিয়া বিশেষণঃ যে পদ ক্রিয়া সংগঠনের ভাব, কাল বা রূপ নির্দেশ করে, তাকে ক্রিয়া বিশেষণ বলে। যথা-

         ক. ক্রিয়া সংগঠনের ভাবঃ ধীরে ধীরে বায়ু বয়।

         খ. ক্রিয়া সংগঠনের কালঃ পরে একবার এসো।

     ২. বিশেষণীয় বিশেষণঃ যে পদ নাম বিশেষণ অথবা ক্রিয়া বিশেষণকে বিশেষিত করে, তাকে বিশেষণীয় বিশেষণ

         বলে। যথা- ক. নাম বিশেষণঃ সামান্য একটু দুধ দাও। এ ব্যাপারে সে অতিশয় দুঃখিত।

         খ. ক্রিয়া বিশেষণের বিশেষণঃ রকেট অতি দ্রুত চলে।

     ৩. অবয়ের বিশেষণঃ যে ভাব-বিশেষণ অব্যয় পদ অথবা পদের অর্থকে বিশেষিত করে, তাকে অব্যয়ের বিশেষণ

          যথা- ধিক্‌ তারে, শত ধিক্‌ নির্লজ্জ যে জন।

     ৪. বাক্যের বিশেষণঃ কখনো কখনো কোনো বিশেষণ পদ একটি সম্পূর্ণ বাক্যকে বিশেষিত করতে পারে, তখন        তাকে বাক্যের বিশেষণ বলা হয়। যেমন- দূর্ভাগ্যক্রমে দেশ আবার নানা সমস্যা জালে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে। বাস্তবিকই

আজ আমাদের কঠিন পরিশ্রমের প্রয়োজন।

  • বিধেয় বিশেষণঃ বাক্যের বিধেয় অংশে যেসব বিশেষণ বসে, সেসব বিশেষণকে বিধেয় বিশেষণ বলে। যেমন- ‘লোকটা পাগল’ বা ‘এই পুকুরের পানি ঘোলা’ – বাক্যে ‘পাগল’ ও ‘ঘোলা’ বিধেয় বিশেষণ।

সর্বনাম

  • বিশেষ্যের পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহুত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে।

বিশেষ্যের পরিবর্তে ব্যবহুত শব্দকে সর্বনাম শব্দ বলে। বাক্যের মধ্যে বিশেষ্য যে ভূমিকা পালন করে, সর্বনাম

অনুরূপ ভূমিকা পালন করে। যেমন- “শিমুল মনোযোগের সঙ্গে পড়াশোনা করত। তাই সে পরীক্ষায় ভালো করছে।” দ্বিতীয় বাক্যের ‘সে’ প্রথম বাক্যের ‘শিমুল’-এর পরিবর্তে বসেছে। বিশেষ্য শব্দের মতো সর্বনাম শব্দের সঙ্গেও বিভক্তি, নির্দেশক, বচন প্রভৃতি যুক্ত হয়।

  • সর্বনামের শ্রেণিবিভাগঃ

বাংলা ভাষায় ব্যবহুত সর্বনামসমূহকে নিম্নলিখিত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে ।

১. ব্যক্তিবাচক বা পুরুষবাচকঃ আমি, আমরা, তুমি, তোমরা, সে, তারা, তাহারা, তিনি, এ, এরা, ও, ওরা ইত্যাদি ।

২. আত্নবাচকঃ স্বয়ং, নিজে, খোদ, আপনি ।

৩. সামীপ্যবাচক/নির্দেশকঃ এ, এই, এরা, ইহারা, ইনি ইত্যাদি।

৪. দূরত্ববাচকঃ ঐ, ঐসব।

৫. সাকুল্যবাচক/সকলবাচকঃ সব, সকল, সমুদয়, তাবৎ।

৬. প্রশ্নবাচকঃ কে, কি, কী, কোন, কাহারা, কার, কিসে?

৭. অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপকঃ কোন, কেহ, কেউ, কিছু।

৮. ব্যতিহারিক/পারস্পরিকঃ আপনা আপনি, নিজে নিজে, আপসে, পরস্পর ইত্যাদি।

৯. সংযোগজ্ঞাপকঃ যে যিনি, যারা, যাহারা ইত্যাদি।

১০. অন্যদিবাচকঃ অন্য, অপর, পর ইত্যাদি।

[নোট- সাপেক্ষ সর্বনামঃ পরস্পর নির্ভরশীল দুটি সর্বনাম কে সাপেক্ষ সর্বনাম বলে। যারা-তারা, যে-সে, যেমন-তেমন।]

৩. স্থানবাচক ক্রিয়াবিশেষণঃ ক্রিয়ার স্থান নির্দেশ করে স্থানবাচক ক্রিয়াবিশেষণ। যেমন- মিছিলটি সামনে এগিয়ে যায়।

৪. নেতিবাচক ক্রিয়াবিশেষণঃ না, নি ইত্যাদি দিয়ে ক্রিয়ার নেতিবাচক অবস্থা বোঝায়। এগুলো সাধারণত ক্রিয়ার পরে বসে। যেমন- তিনি বেড়াতে যাইনি। সে এখন যাবে না

৫. পদাণু ক্রিয়াবিশেষণঃ বাক্যের মধ্যে বিশেষ কোনো ভূমিকা পালন না করলেও ‘কি’, ‘যে’, ‘বা’, ‘না’, ‘তো’ প্রভূতি পদাণু ক্রিয়াবিশেষণ হিসেবে কাজ করে।

যেমন-কিঃ আমি কি যাব?

যেঃ খুব যে বলেছিলেন আসবেন!

বাঃ কখনো বা দেখা হবে।

নাঃ একটু ঘুরে আসুন না, ভালো লাগবে।

তোঃ মরি তো মরব।

অনুসর্গঃ যেসব শব্দ কোন শব্দের পরে বসে শব্দটিকে বাক্যের সঙ্গে সম্পর্কিত করে, যেসব শব্দকে অনুসর্গ বলে। যেমন- তোমাকে দিয়ে এ কাজ হবে না। সে কাজ ছাড়া কিছুই বোঝে না।

কয়েকটি অনিসর্গের উদাহরণঃ অপেক্ষা, কর্তৃক, থেকে, দিকে, দিয়ে, দ্বারা, বিনা, মধ্যে হতে।

যেসব শব্দের পরে অনুসর্গ বসে, সে সব শব্দের সঙ্গে- ‘কে’ – ‘র’ বিভক্তি বসে।

অনুসর্গকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে- সাধারণ অনুসর্গ ক্রিয়াজাত অনুসর্গ।

সাধারণ অনুসর্গঃ যেসব অনুসর্গ ক্রিয়া ছাড়া অন্য শব্দ তৈরী হয়েছে, সেগুলোকে সাধারণ অনুসর্গ বলে।

যেমন- উপরেঃ মাথার উপরে নীল আকাশ।

ক্রিয়াজাত অনুসর্গঃ যেসব অনুসর্গ ক্রিয়াপদ থেকে তৈরী হয়েছে, সেগুলোকে ক্রিয়াজাত অনুসর্গ বলে।

যেমন- দিয়েঃ মন দিয়ে পড়ালেখা করা দরকার।

যোজকঃ পদ বা বাক্যেকে যেসব শব্দ যুক্ত করে, সেগুলোকে যোজক বলে।

যেমন- এবং, ও, আর ইত্যাদি।

বৈশিষ্ট অনুযায়ী যোজককে নিম্ন লিখিত শ্রেণিতে ভাগ করা যায়ঃ

১। সাধারণ যোজক- এ ধরণের যোজক দুটি শব্দ বা বাক্যেকে যোগ করে।

যেমন- উচ্চপদ ও সামাজিক মর্যাদা সকলে চায়।

            রহিম ও করিম কাজটি করেছে।

২। বিকল্প যোজকঃ এ ধরণের যোজক একাধিক শব্দ বা বাক্যের মধ্যে বিকল্প নির্দেশ করে।

যেমন- রহিম কিংবা করিম দায়ী।

            ঘর ভাড়া দাও নইলে ছেড়ে দাও।

৩। বিরোধ যোজক এ ধরণের যোজক বাক্যের দুটি অংশের সংযোক ঘটায় এবং প্রথম বাক্যের সঙ্গে বিরোধ তৈরী করে। সেমন- সে ধনী অথচ কৃপণ। চেষ্টা করেছি কিন্তু কৃতকার্য হইনি।

৪। কারণ যোজকঃ এ ধরণের যোজক বাক্যের দুটি অংশের মধ্যে সংযোগ ঘটায় যার একটি অন্যটির কারণ। যেমন- বসার সময় নেই, তাই যেতে হচ্ছে। ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস তাই দিনটি উদযাপন করি।

৫। সাপেক্ষ যোজকঃ এ ধরণের যোজক একে অন্যের পরিপূরক হয়ে বাক্যে ব্যবহুত হয়।

যেমন- যত পড়ছি, ততই নতুন করে জানছি।

যেমন কর্ম, তেমন ফল।

যত গর্জে তত বর্ষে না।

আবেগঃ মনের নানা ভাব প্রকাশ করা হয় যেসব শব্দ দিয়ে সেগুলোকে আবেগ শব্দ বলা হয়।

যেমন- ছি ছি, আহা, বাহ, শাবাশ, হায় হায় ইত্যাদি।

নিচে বিভিন্ন ধরণের আবেগ শব্দের প্রয়োগ দেখানো হলো।

সিন্ধান্ত আবেগঃ এ জাতীয় শব্দের সাহায্যে অনুমোদন, সম্মতি, সমর্থন ইত্যাদি ভাব প্রকাশ করা হয়।

যেমন- বেশ, তবে যাওয়াই যাক।

প্রশংসা আবেগঃ এ ধরণের শব্দ প্রশংসা বা তারিফের মনোভাব প্রকাশে ব্যবহুত হয়।

যেমন- শাবাশ! এমন খেলাই তো চেয়েছিলাম।

বিরক্তি আবেগঃ এ ধরণের শব্দ অবজ্ঞা, ঘৃনা বিরক্তি ইত্যাদি মনোভাব প্রকাশে ব্যবহুত হয়।

যেমন- ছি ছি! তুমি এত নিচ। কী আপদ! লোকটা পিচু ছাড়ে না।

আতঙ্ক আবেগঃ এ ধরণের আবেগ-শব্দ আতঙ্ক, যন্ত্রণা, কাতরতা ইত্যাদি প্রকাশ করে।

যেমন- বাপরে বাপ! কী ভয় ভয়ঙ্কর ছিল রাক্ষসটা।

বিস্ময় আবেগঃ এ ধরণের শব্দ বিস্মিত বা আশ্চর্য হওয়ার ভাব প্রকাশ করে।

যেমন- আহ, কী চমৎকার দৃশ্য!

করুণা আবেগঃ এ ধরণের শব্দ করুণা, মায়া, সহানুভূতি ইত্যাদি মনোভাব প্রকাশ করে।

যেমন- আহা! বেচারার এতো কষ্ট। হায় হায়! ওর এখন কী হবে!

বর্ণের উচ্চারণ

বাংলা ভাষায় ৩৭টি মূল ধ্বনিকে প্রকাশ করার জন্য রয়েছে ৫০টি মূল বর্ণ। এর মধ্যে অধিকাংশ বর্ণের উচ্চারণ মূল ধ্বনির অনুরুপ। কয়েকটি বর্ণের একাধিক উচ্চারণ রয়েছে। আবার কয়েকটি ক্ষেত্রে একাধিক বর্ণের উচ্চারণ অভিন্ন। ধ্বনিগুলো দিয়ে শব্দ তৈরী হওয়ার সময়ে পাশের ধ্বনির প্রভাবে বর্ণের উচ্চারণ অনেক সময়ে বদলে যায়। এখানে বাংলা বর্ণের উচ্চারণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

স্বরবর্ণ

অ বর্ণের উচ্চারণ দুই রকমঃ [অ] এবং [ও]। সাধারণ উচ্চারণ [অ], কিন্তু পাণের ধ্বনির প্রভাবে [অ] কখনো কখনো [ও]-এর মতো উচ্চারিত হয়।

অ বর্ণের স্বাভাবিক উচ্চারণঃ অনেক [অনেক্‌], কথা [কথা্‌], অনাথ [অনাথ্‌]।

অ বর্ণের [ও] উচ্চারণঃ অতি [ওতি], অণু [ওনু], পক্ষ [পোক্‌খো], অদ্য[ওদ্‌দো], মন[মোন্‌]

আ বর্ণের স্বাভাবিক উচ্চারণ [আ]ঃ আকাশ [আকাশ্‌], রাত [রাত্‌], আলো [আলো্‌]।

[আ] জ্ঞ-এর সঙ্গে থাকলে [অ্যা]-এর মতো উচ্চারিত হয়। যেমন- জ্ঞান [গ্যান্‌], জ্ঞাত [গ্যাতো্‌], জ্ঞাপন [গ্যাপোন্‌] ।

ই, ঈ

[ই] ধ্বনির হ্রস্বতা ও দীর্ঘতা বোঝাতে দুটি বর্ণ রয়েছেঃ ই এবং ঈ। কিন্তু বাংলা ভাষায় উভয় বর্ণের উচ্চারণ একই রকমঃ দিন [দিন্‌], দীন [দীনো], বিনা [দিনো], বীণা [বিনা], হীন [হিনো] ।

উ, ঊ

[উ] ধ্বনির হ্রস্বতা ও দীর্ঘতা বোঝাতে দুটি বর্ণ রয়েছেঃ উ ও ঊ। কিন্তু বাংলা ভাষায় উভয় বর্ণের উচ্চারণ একই রকমঃ উচিত [উচিত্‌], ঊষা [ঊশা], ঊনিশ [উনিশ্‌], ঊনবিংশ [উনোবিঙ্‌শো] ।

ঋ বর্ণের উচ্চারণ [রি]-এর মতোঃ ঋতু [রিতু], ঋণ [রিন্‌], কৃষক [ক্রিশক্‌], দৃশ্য [দ্রিশ্‌শো]।

এ বর্ণের উচ্চারণ দুই রকমঃ [এ] এবং [অ্যা]। সাধারণ উচ্চারণ [এ], কিন্তু পাশের ধ্বনির প্রভাবে এ কখনো কখনো [অ্যা] উচ্চারিত হয়।

এ বর্ণের স্বাভাবিক উচ্চারণঃ একটি [এক্‌টি], দেশ [দেশ্‌], এলো [এলো্‌]।

এ বর্ণের [অ্যা] উচ্চারণঃ একটা [অ্যাক্‌টা], বেলা [ব্যালা্‌], খেলা [খ্যালা] ।

ঐ বর্ণের উচ্চারণ [ওই]ঃ ঐকিক [ওইকিক্‌], তৈল [তোই্‌লো]

ও বর্ণের উচ্চারণ [ও]ঃ ওল [ওল্‌], বোধ [বোধ্‌]

ঔ বর্ণের উচ্চারণ [ওউ্‌]ঃ ওল [ওল্‌], বোধ [বোধ্‌]

ব্যঞ্জনবর্ণ

ব্যঞ্জনবর্ণগুলো সাধারণত নিজ নিজ ধ্বনি অনুযায়ী উচ্চারিত হয়। যেমন- কলা, খর, বল, নাচ, শব্দের ক, খ, ব, ন ইত্যাদি বর্ণের উচ্চারণ যথাক্রমে [ক], [খ], [ব], [ন] ইত্যাদি।

তবে কয়েকটি ব্যঞ্জনবর্ণের উচ্চারণ নিজ নিজ ধ্বনি থেকে আলাদা। এ ধরণের কয়েকটি বর্ণের উচ্চারণ নিয়ে আলোচনা করা হলো।

ঞ বর্ণের নিজস্ব কোনো ধ্বনি নেই। স্বতন্ত্র ব্যবহারে [অঁ]-এর মতো আর সংযুক্ত ব্যঞ্জনে [ন্‌]-এর মতো উচ্চারিত হয়ঃ মিঞা [মিয়াঁ], চঞ্চল [চন্‌চল্‌], গঞ্জ [গন্‌জো]।

ণ বর্ণের উচ্চারণ [ন্‌]ঃ কণা [কনা], বাণী [বানি], হরিণ [হোরিন্‌]।

ব বর্ণের সাধারণ উচ্চারণ [ব]। তবে ফলা হিসেবে এই বর্ণের উচ্চারণে স্বাতন্ত্র্য আছে।

শব্দের আদিতে ব-ফলার উচ্চারণ হয় না। যেমন- ত্বক [তক্‌], শ্বশুর [শোশুর্‌], স্বাধীন [শাধিন্‌] ।

শব্দের মধ্যে বা শেষে ব-ফলা যুক্ত হলে সেই ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়ঃ অশ্ব [অশ্‌শো], বিশ্বাস [বিশ্‌শাশ্‌], পক্ব [পক্‌কো] ।

ম বর্ণের সাধারণ উচ্চারণ [ম] । শব্দের প্রথম বর্ণে ম-ফলা থাকলে সেই বর্ণ উচ্চারণের সময়ে ম-এর উচ্চারণ [তাঁ]-এর মতো হয়, যেমন- শ্বাশান [শঁশান্‌], স্মরণ [শঁরোন্‌], । শব্দের মধ্যে ম-ফলা থাকলে সেই বর্ণে উচ্চারণে দ্বিত্ব হয় এবং সামান্য অনুনাসিক হয়, যেমন- যুগ্ম [জুগ্‌মো], জন্ম [জল্‌মো], গুল্ম [গুল্‌মো] ।

য বর্ণের উচ্চারণ [জ্‌]: যদি [জোদি], যিনি [জিনি], সূর্য [শুর্‌জো], । তবে য-ফলা থাকলে স্বরের উচ্চারণে পরিবর্তন হয়, যেমন- ব্যতীত [বেতিতো], ব্যথা [ব্যাথা], । শব্দের মাঝখানে বা শেষে য-ফলা বর্ণের সঙ্গে যুক্ত থাকলে ঐ বর্ণের উচ্চারণ দ্বিত্ব হয়, যেমন- উদ্যম [উদ্‌দম্‌], গদ্য [গোদ্‌দো], । কিন্তু শব্দের মধ্যে বা শেষে যুক্তব্যঞ্জনের সঙ্গে থাকা ‘য’-এর কোনো উচ্চারণ হয় না, যেমন- সন্ধ্যা [শোন্‌ধা], স্বাস্থ্য [শাস্‌থো], অর্ঘ্য [অর্‌ঘো] ।

র বর্ণের উচ্চারণ [র] । তবে র-ফলা হিসেবে এর উচ্চারণে বৈচিত্র্য আছে। শব্দের মধ্যে বা শেষে কোনো ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে র-ফলা থাকলে দ্বিত্বসহ র-ফলাউচ্চারিত হয়, যেমন- মাত্র [মাত্‌ত্রো], বিদ্রোহ [বিদ্‌দ্রোহো], যাত্রী [জাত্‌ত্রি], । কিন্তু শব্দের মধ্যে বা শেষে যুক্তব্যঞ্জনের সঙ্গে র-ফলা যুক্ত হলে দ্বিত্ব উচ্চারণ হয় না, যেমন- কেন্দ্র [কেন্‌দ্রো], শাস্ত্র [শাস্‌ত্রো], বস্ত্র [বস্‌ত্রো] ।

শ, ষ, স

শ কখনো [শ]-এর মতো উচ্চারিত হয়, কখনো [স]-এর মতো উচ্চারিত হয় । স কখনো [শ]-এর মতো উচ্চারিত হয়, আবার কখনো [স]-এর মতো উচ্চারিত হয় । ষ বর্ণের উচ্চারণ সব সময়ে [শ] ।

শ বর্ণের [শ] উচ্চারণঃ শত [শতো], শসা [শশা] ।

শ বর্ণের [স] উচ্চারণঃ শ্রমিক [স্রোমিক্‌], শৃগাল [স্রিগাল্‌] ।

ষ বর্ণের [শ] উচ্চারণঃ ভাষা [ভাশা], ষোলো [শোলো] ।

স বর্ণের [শ] উচ্চারণঃ সাধারণ [শাধারোন্‌], সামান্য [শামান্‌নো] ।

স বর্ণের [স] উচ্চারণঃ আস্তে [আস্‌তে], সালাম [সালাম] ।

বচন

  • বচন একটি পারিভাষিক শব্দ ।

  • বচন বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের সংখ্যার ধারনা প্রকাশ করে ।

  • বচন মানে সংখ্যার ধারনা ।

  • বচন প্রধানত দুই প্রকার যথা- (ক) একবচন ও (খ) বহুবচন ।

  • একবচনঃ যে বিশেষ্য ও সর্বনাম পদ দ্বারা কোনো ব্যাক্তি, প্রাণীর বা বস্তুর একটি মাত্র ধারণা প্রকাশ করে তাকে একবচন বলে ।

যেমন- স্যার ক্লাসে এসেছেন ।

মুলত শব্দের শেষে ‘টি’ ‘টা’, ‘খানা’, ‘খানি’, গাছা ইত্যাদি প্রত্যয় বা লগ্নক যোগ করে একবচন প্রকাশ পায় । যেমন- একখানি হার, একখানা শাড়ি, লোকটি ।

  • আবার শব্দের আগেও এক / একটি যোগ করে একবচন প্রকাশ পায়।

  • বহুবচনঃ যে বিশষ্য বা সর্বনাম পদ দ্বারা কোনো ব্যাক্তি, প্রাণীর বা বস্তুর একের অধিক ধারণা বোঝায় তাকে বহুবচন বলে। যেমন- পাখিরা, ছেলেরা, ফলগুলো।

  • বাংলা ভাষায় বহুবচন প্রকাশের জন্য এই বিভক্তিগুলো যুক্ত থাকে রা, এরা, গুলো, দিক, দের প্রভূতি।

  • পাশাপাশি কিছু সমষ্টিবোধক প্রত্যয়/লগ্নক যুক্ত সেগুলো সংস্কৃত থেকে এসেছে।

সব, সকল, সমুদয়, কুল, বৃন্দ, বর্গ, রাজি, রাশি, পাল, দাম, নিকর, মালা।

  • ‘রা’, ‘এরা’, ‘গুলি’,- দের ইত্যাদি যোগে বহুবচন

রা- ধনীরা, ছাত্রীরা

এরা- মেয়েরা, গায়কেরা

গুলো- আমগুলো, ফুলগুলো

গুলি- বইগুলি, ঘরগুলি

দের- মেয়েদের, মুক্তিযোদ্ধাদের

  • উন্নত প্রাণী বা মানী পক্ষের বহুবচন করার সময়ে গণ, বৃন্দ, মন্ডলী, বর্গ ইত্যাদি লগ্নক/প্রত্যয় যুক্ত হয়।

গণ- জনগন, সদস্যগণ

বৃন্দ- দর্শকবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ

মন্ডলী- সুধীমন্ডলী, সম্পাদকমন্ডলী

বর্গ- পণ্ডিতবর্গ, মন্ত্রীবর্গ

  • প্রাণী ও অপ্রাণী বাচক শব্দের বহুবচনে ব্যবহুত শব্দ

কুল- কবিকুল – বিহঙ্গ – বিহঙ্গকুল

সকল – পর্বতসকল, মনুষ্যসকল

সব – ভাইসব, পাঁখিসব

সমূহ – বৃক্ষসমূহ, মনুষ্যসমুহ

  • শুধুমাত্র অপ্রাণীর বহুবচন যা বসে।

দাম – কুসুম দাম, শৈবাল দাম

নিকর –কমল নিকর, নক্ষত্র নিকর

রাশি – বালিরাশি, রাজি = বৃক্ষরাজি

নিচয় – কিসুম নিচয়

গুচ্ছ – কবিতা গুচ্ছ, কেশগুচ্ছ

মালা – পর্বত মালা

  • সর্বনামের বচনভেদ –

সে – তারা।        তিনি – তারা।      এটা –এগুলো।    ও – ওরা।

  • শব্দের আগে এত, কত, যত, অনেক প্রচুর যোগ করে বহুবচক করা যায়।

  • বিশেষ্যর আগে সংখ্যা যোগে বহুবচন হয় – দশ টাকা, হাজার টাকা

  • অনেক সময় বিশেষ্য ও বিশেষণ প্রদের দ্বিত্ব ব্যবহারে বহুবচন হয়।

হাঁড়ি হাঁড়ি সন্দেশ

কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা

বড় বড় ফুল

  • বিশেষ নিয়মে ও বহুবচন হয়। এটাই পরিচালকদের বাড়ি। মেয়েরা, কানাকানি করছে। সকলে সব জানে না ।

  • বিদেশী শব্দ যোগেও বহুবচন হয়।

আন – সাহেব – সাহেবান। বুজুর্গ – বুজুর্গান ।

জাত – শিল্প – শিল্পজাত

হাঁ – আমলা – আমলাহা

লক্ষণীয়ঃ রা বা এরা উন্নত প্রাণীর বহুবচনে বসে।

            গুলো, গুলি, ইতর ও অপ্রাণীর বহুবচনে বসে।

  • পাল ও যূথ জন্তুর বহুবচনে বসে – অশ্বপাল, হস্তিযূথ

বিশেষ্য শব্দে এক বচনের ব্যবহারে অনেক সময় বহুবচন বোঝাতে হয়।

সিংহ বনে থাকে।

পোকার আক্রমনে ফসল নষ্ট হয় (বহুবচন)

বাজারে লোক জমেছে।

  • বহুবচন বোধক শব্দ পরপর দুইবার বসে না। বসলে বচন জনিত ভুল হয়।

  • ভাল ভাল ছেলে গুলোকে পুরস্কারটি দেওয়া হবে।

  • শুদ্ধঃ ভাল ভাল ছেলেকে পুরস্কারটি দেয়া হবে।

  • সকল মানুষেরা মরনশীল

  • সকল মানুষ মরনশীল

শব্দ প্রকরণ

পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দ

  • লিঙ্গ ব্যাকরণের শব্দতত্ত্বে আলোচিত হয় ।

  • লিঙ্গ শব্দের অর্থ চিহ্ন

  • লিঙ্গ ৪ প্রকার । যথাঃ (ক) পুরুষবাচক (খ) স্ত্রীবাচক (গ) উভয়লিঙ্গ এবং (ঘ) ক্লীবলিঙ্গ

  • আধুনিক ব্যাকরণে নর ও নারী বাচক শব্দকে পুরুষ ও স্ত্রী দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

  • বাংলা পুরুষ ও স্ত্রী বাচক শব্দ মুলত ২ ভাগে বিভক্ত যথাঃ-

ক) পতি ও পত্নিবাচক অর্থে অথাৎ স্বামী ও স্ত্রী অর্থে বাবা-মা, খালা-খালু।

খ) সাধারণ পুরুষ ও স্ত্রী জাতীয় অর্থে খোকা-খুকি, হাস-মুরগি ।

  • নারী বাচক শব্দ ২ ধরণের পত্নিবাচক ও অপত্নিবাচক ।

     নরবাচক শব্দ থেকে নারীবাচক শব্দগঠন করা হয় বিভিন্ন প্রত্যয় যোগে।

যেমন-ঃ-

-আ প্রত্যয়ঃ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, প্রিয়-প্রিয়া, কনিষ্ঠ-কনিষ্ঠা।

-ই প্রত্যয়ঃ দাদা-দাদি, জেঠা-জেঠি।

-ঈ প্রত্যয়ঃ কিশোরী-কিশোরী, নর-নারী, সুন্দর-সুন্দরী, ভাগনে/ভাগনী, নিশাচর-নিশাচরী, ভয়ংকর-ভয়ংকরী, ব্রাক্ষণ-ব্রাক্ষিণী, ষোড়শ-ষোড়শী ইত্যাদি।

-ইনী প্রত্যয়ঃ কাঙাল-কাঙালিনী, বিজয়ী-বিজয়িনী, যোগী-যোগিনী, বাঘ-বাঘিনী ইত্যাদি।

-নি প্রত্যয়ঃ জেলে-জেলেনি, বেদে-বেদেনি, ধোপা-ধোপানি ইত্যাদি।

-নী প্রত্যয়ঃ কামার-কামারনী, কুমার-কুমারনী, মজুর-মজুরনী ইত্যাদি।

-ইকা-প্রত্যয় যোগেঃ ক্ষুদ্রার্থে ইকা যোগ হয়। যেমন- নাটক-নাটিকা, মালা-মালিকা, গীত-গীতিকা, পুস্তক-পুস্তিকা ইত্যাদি। (এগুলো স্ত্রী প্রত্যয় নয়, ক্ষুদ্রার্থক প্রত্যয় বা ছোট অর্থে।)

-আনী্‌-প্রত্যয় যোগেঃ ইন্দ্র-ইন্দ্রনী, মাতুল-মাতুলানী ইত্যাদি।

  • আনী- প্রত্যয় যোগে কোনো কোনো সময় অর্থের পার্থক্য ঘটে। যেমন- অরণ্য-অরণ্যানী (বৃহৎ অরণ্য), হিম-হিমানী (জমানো বরফ)

  • ঈনী, যোগেঃ মায়াবী-মায়াবিনী, কুহক-কুহকিনী, যোগী-যোগিনী, মেধাবী-মেধাবিনী ইত্যাদি।

  • কতগুলো শব্দের আগে নর, মদ্দা ইত্যাদি পুরুষবাচক শব্দ এবং স্ত্রী, মাদী ইত্যাদি স্ত্রীবাচক শব্দ যোগ করে পুরুষবাচক ও স্ত্রীবাচক শব্দ গঠন করা হয়। যেমন- নর/মদ্দা/হুলো বিড়াল-মেনি বিড়াল;মদ্দা হাস-মাদী হাস;মদ্দা ঘোড়া-মাদী ঘোড়া; এঁড়ে বাছুর-বকনা বাছুর; বদদ গরু-গাই গরু ইত্যাদি ।

  • কতগুলো পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দ যোগ করে পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দ গঠন করা হয়।

যেমন- ঠাকুর-পো-ঠাকুর-ঝি, গয়লা-গয়লা-বউ, জেলে-জেলে-বউ ইত্যাদি।

  • অনেক সময় আলাদা আলাদা শব্দে পুরুষবাচক ও স্ত্রীবাচক বোঝায়। যেমন- বাবা-মা, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে, সাহেব-বিবি, জামাই-মেয়ে, বর-কনে, বেয়াই-বেয়াইন, বাদশা-বেগম, শুক-সারী ইত্যাদি।

  • নিত্য স্ত্রীবাচক তৎসম শব্দঃ সতীন, অর্ধাঙ্গিনী, কুলটা, বিধাব, অসূর্যম্পশ্যা, অরক্ষণিয়া, সপত্নী।

  • নিত্য স্ত্রীবাচক বাংলা শব্দঃ কতগুলো শব্দ স্ত্রীবাচক । এগুলোর পুরুষবাচক শব্দ নেই। যেমন- সতীন, সৎমা, এয়ো, দাই, সধবা ইত্যাদি।

    বিশেষ নিয়মে সাধিত স্ত্রীবাচক শব্দঃ

  • যেসব পুরুষবাচক শব্দের শেষে ‘তা’ রয়েছে, স্ত্রীবাচক বোঝাতে সেসব শব্দে ‘স্ত্রী’ হয়। যেমন- নেতা-নেত্রী, কর্তা-কর্ত্রী ।

  • পুরুষবাচক শব্দের শেষে অত্‌, বান্‌, মান্‌, ঈয়ান থাকলে অতী, বতী, মতি ঈয়সী হয়। যেমন- সৎ-সতী, মহৎ-মহতী, গুনবান-গুণবতী, শ্রীমান-শ্রীমতী, গরীয়ান- গরিয়সী।

  • কোনো কোনো পুরুষবাচক শব্দ থেকে বিশেষ নিয়মে স্ত্রীবাচক শব্দ গঠিত হয়। যেমন- রাজা-রানী, যুবক-যুবতী, শ্বশুর-শ্বশ্রু, নর-নারী, বন্ধু-বান্ধবী, দেবর-জা, শিক্ষক-শিক্ষায়িত্রী, সভাপতি-সভানেত্রী ইত্যাদি।

    বিদেশী স্ত্রীবাচক শব্দঃ খান-খানম, মরদ-জেনানা, মালেক-মালেকা, মুহতারিম-মুহতারিমা।

কতগুলো বাংলা শব্দে পুরুষ ও স্ত্রী দু-ই বোঝায়। যেমন- জন, পাখি, শিশু, সন্তান, শিক্ষিত, গুরু ইত্যাদি।

  • কতগুলো শব্দে কেবল পুরুষ বোঝায়। যেমন- কবিরাজ, ঢাকী, কৃতদার, অকৃতদার ইত্যাদি।

  • কূল-উপাধিরও স্ত্রীবাচকতা রয়রছে। যেমন- ঘোষ (পুরুষ) ঘোষজা (কন্যা অর্থে), ঘোষজায়া (পত্নী অর্থে)।

  • কিছু স্ত্রীবাচক শব্দের একাধিক পুরুষ বাচক রুপ থাকে।

স্ত্রীলিঙ্গ

পুংলিঙ্গ(পতিবাচক অর্থে)

পুংলিঙ্গ(সাধারণ পুংবাচক অর্থে)

শ্যালিকা

শালক, শালা

বধূ

বর, স্বামী

বলদ, ষাঁড়

বিবি

সাহেব

গোলাম

পত্নী

স্বামী

পতি

ননদ

ননদাই

বেগম

বাদশা, নবান

সাহেব

  • কিছু পুরুষ বাচক শব্দের একাধিক স্ত্রী বাচক রূপ থাকে।

পুংলিঙ্গ

স্ত্রীলিঙ্গ(পত্নীবাচক অর্থে)

স্ত্রীলিঙ্গ(সাধারণ স্ত্রীবাচক অর্থে)

গোয়ালা

গোয়ালাবৌ

গোয়ালিনী

ঘোষ

ঘোষজায়া

ঘোষজা

চাকর

চাকরানী, বাঁদী

ছেলে

মেয়ে, ঝি, কন্যা

জেলে

জেলেবউ

জেলেনী

বর

বধূ, বৌ, বউ

কনে

পুত্র

পুত্রবধূ

কন্য, দুহিতা

ভাশুর/দেবর

জা

ননদ

শিক্ষক

শিক্ষকপত্নী

শিক্ষিকা, শিক্ষায়িত্রী

সাহেব

বিবি

মেম, বেগম

হুলো বিড়াল

মেনি বিড়াল

ঠাকুর

ঠাকুরানি/ঠাকরুন

ঠাকুরাইন

বিরাম চিহ্ন

১। বিরাম চিহ্নের অপর নাম যতি, ছেদ, বিশ্রাম, চিহ্ন ।

২। বিরাম চিহ্নের প্রবর্তক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ।

৩। মধ্য যুগে বিরাম চিহ্ন ছিল ২ টি ।

৪। প্রান্তিক বিরাম চিহ্ন ৩ টি ।

৫। বিরাম চিহ্ন বাক্যতত্ত্বের আলোচ্য বিষয় ।

সংজ্ঞাঃ বক্তার বক্তব্য সুস্পষ্ট করার জন্য বাক্যের মাঝে বা শেষে, যে চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাকে বিরাম চিহ্ন বলে।

নিচে বিভিন্ন প্রকার যতিচিহ্নের নাম, আকৃতি এবং তাদের বিরতি কালের পরিমাণ নির্দেশিত হলোঃ

ব্যবহুত নাম

বাংলা অর্থ

ইংরেজি প্রতিশব্দ

আকার

বিরতির সময়

বি-

জি

দা

কো

 কোল

ন-

ড্যাস

বিস্ময় চিহ্ন

বিস্ময়সূচক চিহ্ন

Note of Exclamation

!

এক সেকেন্ড

জিজ্ঞাসা

জিজ্ঞাসা

Note of Interrogation

?

এক সেকেন্ড

দাড়িঁ

পূর্ণচ্ছেদ

Full stop

এক সেকেন্ড

কোলন

ছেদ বা দৃষ্টাচ্ছেদ

Colon

:

এক সেকেন্ড

কোলন ড্যাস

ছেদ বা দৃষ্টাচ্ছেদ/বাক্যসঙ্গতি বা রেখা চিহ্ন বা গতি চিহ্ন

Colon Dash

:-

এক সেকেন্ড

ড্যাস

বাক্যসঙ্গতি চিহ্ন বা রেখা চিহ্ন বা গতি চিহ্ন

Dash

এক সেকেন্ড

ব-

হা-

বন্ধনী

বন্ধনি চিহ্ন

Brackets

(),{},[]

নেই

হাইফেন

শব্দসংযোগ চিহ্ন

Hyphen

নেই

লোপ চিহ্ন

ইলেক চিহ্ন

Apostrophe

,

নেই

সে

কমা

পাদচ্ছেদ

Comma

,

১ বলার সমান সময়

উদ্ধৃতি চিহ্ন

উদ্ধৃতি চিহ্ন

Inverted commas, Quotation mark

“ ” ‘ ’

১ বলার সমান সময়

সেমিকোলন

অর্ধচ্ছেদ চিহ্ন

Semicolon

;

১ বলার দ্বিগুণ সময়

বিকল্প চিহ্ন

বিকল্প চিহ্ন

Slash

/

বিরতি

বর্জন চিহ্ন

বর্জন চিহ্ন

Asterisk

… বা

***

নেই

সংক্ষেপন চিহ্ন

বিন্দু

Dot/abbreviation

.

নেই

এসব বিরাম চিহ্ন যথাযথ স্থানে ব্যবহার করা হলে বাক্যের অর্থ বোঝা যায়। বাক্য অর্থ হয়ে ওঠে। বিশেষভাবে ব্যাকরণের নিম্নলিখিত চিহ্নগুলো ব্যবহুত হয়।

ব্যাকরণিক বিরাম চিহ্ন ৪ টি

            (ক) ধাতু বোঝাতে ( ) চিহ্নঃ স্থা = স্থা ধাতু।

            (খ) পরবর্তী শব্দ থেকে উৎপন্ন বোঝাতে (<) চিহ্নঃ জাঁতরেল < জেনারেল

            (গ) পূর্ব্বর্তী শব্দ থেকে উৎপন্ন বোঝাতে (>) চিহ্নঃ গঙ্গা>গাঙ ।

            (ঘ) সমানবাচক বা সমস্তবাচক বোঝাতে সমান (=) চিহ্নঃ নর ও নারী = নরনারী

১। দাড়িঁ (।) দাড়িঁ সাধারণত বাক্যের সমাপ্তি নির্দেশ করে। যেমন- আয়াত ফুটবল খেলা পছন্দ করে।

২। কমা (,) কমা সামান্য বিরতি নির্দেশ করে। শব্দ, বর্গ ও অধীন বাক্যের আলাদা করতে কমার ব্যবহার হয়। যেমন- (ক) সম্বোধনের পরে কমা বসাতে হয়। যেমন- রশিদ, এদিকে এসো।

            (খ) মাসের তারিখ লিখতে বার ও মাসের পর ‘কমা’ বসাতে হবে। যেমন- ১৬ ই পৌষ, বুধবার, ১৩৯৯ সন।

            (গ) বাড়ি বা রাস্তার নম্বরের পরে কমা বসলে। যেমন- ৬৮, নবাবপুর রোড, ঢাকা – ১০০০।

৩। সেমিকোলন (;) স্বাধীন অথচ ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত একাধিক বাক্যেকে এক বাক্য পরিণত করার কাজে সেমিকোলন ব্যবহুত হয়। যেমন- সোহাগ ক্রিকেট পছন্দ করে ; আমি ফুটবল পছন্দ করি। তিনি পড়েছেন বিজ্ঞান;পেশা ব্যাংকার; আর নেশা সাহিত্যচর্চা ।

৪। প্রশ্নচিহ্ন (?) সাধারণত কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করার ক্ষেত্রে প্রশ্নচিহ্ন বসে। যেমন- বাংলাদেশের রাজধানীর নাম কী?

৫। বিস্ময়চিহ্ন (!) সাধারণত বিস্ময়, দুঃখ, আনন্দ, রাগ-ঘৃণা ইত্যাদি প্রকাশের জন্য বিস্ময়চিহ্ন ব্যবহুত হয়।

যেমন- উঃ! পায়ে বড্ড লেগেছে।

৬। হাইফেন (-) বাক্যের মধ্যকার একাধিক পদকে সংযুক্ত করতে হাইফেন ব্যবহুত হয়। যেমন- (ক) মা – বাবার কাছে সন্তানের গৌরব সবচেয়ে বড় গৌরব । (খ) জাতি – ধর্ম – বর্ণ নির্বিশেষে সকলকেই দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে।

৭। ড্যাস (-) সাধারণত দুটি বাক্যকে এক বাক্যে পরিণত করার কাজে ড্যাস ব্যবহুত হয়। যেমন- (ক) বাংলাদেশ দল জয়লাভ করেছে – বিজয়ের আনন্দে দেশের জনগন উচ্ছ্বাসিত । (খ) ঐ লোকটি – যিনি গতকাল এসেছিলেন – তিনি আমার মামা।

৮। কোলন (:) একটি অপূর্ণ বাক্যের পরে অন্য একটি বাক্যের অবতারণা করতে হলে কোলন ব্যবহুত হয়। যেমন- সভায় সাব্যস্ত হলোঃ একমাস পরে নতুন সভাপতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

৯। কোলন ড্যাস (:-) উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত প্রয়োগ করতে হলে এবং ড্যাস চিহ্ন একসঙ্গে ব্যবহুত । যেমন- পদ পাঁচ প্রকারঃ- বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া ।

১০। উদ্ধারণচিহ্ন (‘-’), (“-”) বক্তার উক্তিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বোঝাতে উদ্ধারণ চিহ্ন বসে। যেমন- স্যার বললেন “গতসপ্তাহে তুরস্কে ভয়ানক ভূমিকম্প হয়েছে”

১১। বন্ধনী (), {}, [] বাংলা সাহিত্যে বিশেষ ব্যাখ্যামূলক অর্থে বন্ধনী চিহ্নের ব্যবহার হয়। যেমন- পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

১২। বিন্দু (.) শব্দের সংক্ষিপ্ত ব্যবহারে বিন্দু ব্যবহুত হয়। যেমন- ড. মুহম্মদ

ভাষার প্রধান উপাদান চারটিঃ ১. ধ্বনি ২. শব্দ ৩. বাক্য ৪. বাগর্থ ।

১৩। ত্রিবিন্দু (…) কোনো অংশ বাদ দিতে চাইলে ত্রিবিন্দুর ব্যবহার হয়। যেমন- তিনি রেগে গিয়ে বললেন, “তার মানে তুমি একটা … ।

১৪। বিকল্পচিহ্ন (/) একটির বিকল্প বদলে অন্যটির সম্ভাবনা বোঝাতে বিকল্পচিহ্নের ব্যবহার হয়। যেমন- শুদ্ধ/অশুদ্ধ চিহ্নিত করো।

ক্রিয়ার কাল

  • ক্রিয়া সংগঠনের সময়কে কাল বলে।

  • যে কোন কাজ সম্পাদনের জন্য যে সময়ের দরকার হয় তাকে অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত এই তিন কালে বিবেচনা করা হয়। ৩ পুরুষভেদে ক্রিয়ার রুপের পার্থক্য হয়। আর বচন ভেদে পার্থক্য হয় না।

  • শ্রেণিবিভাগ অনুসারে ক্রিয়ার কাল যথাঃ বর্তমান, অতীত, ভবিষ্যৎ কাল।

বর্তমান কাল (Present Tense)

বর্তমান কালঃ (Present Tense) বর্তমানে ক্রিয়ার যে কাল সম্পন্ন হয় তাকে বর্তমান কাল বলে।

ক) সাধারণ বর্তমান (Present Indefinite) যে ক্রিয়া সাধারণত বর্তমানে ঘটে তার কালকে সাধারণ বর্তমান কাল বলে। যেমন- রহিম গান গায় । সে ফুল তুলে। ক্রিয়ার শেষেঃ অ, ই, এ, ও, (এন)

  • নিত্যবৃত বর্তমান কালঃ বর্তমানের অভ্যাস, চিরন্তন সত্য, অনিশ্চয়তা প্রকাশে নিত্যবৃত বর্তমান কাল হয়।

আমি রোজ স্কুলে যাই (অভ্যাস)

সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হয় (স্বাভাবিক)

মানুষ মরণশীল

তিন আর চারে সাত হয় (স্থায়ী সত্য প্রকাশে)

খ) ঘটমান বর্তমানঃ (Present Continuous) যে ক্রিয়া শুরু হয়ে এখনো চলছে তাকে ঘটমান কাল বলে ।

আমি বাড়ি যাচ্ছি । ক্রিয়ার শেষে চ্ছ, চ্ছেন, চ্ছে, ছি, ছিস, ছে, ছেন। করছি, করছিস, করছেন।

গ) পুরাঘটিত বর্তমানঃ (Present Perfect) যে ক্রিয়ার কাল কেবল মাত্র সম্পন্ন হয়েছে কিন্তু তার ফল এখনো বিদ্যমান তাকে পুরাঘটিত বর্তমান কাল বলে।

যেমন- আমি ভাত খেয়েছি । সে ব্যাকরণ পড়েছে। য়েছি, য়েছ, য়েছেন ।

ঘ) বর্তমান অনুজ্ঞাঃ (Present Imperative) বর্তমানে ক্রিয়া সম্পাদনের আদেশ, অনুরোধ, ইত্যাদি বুঝালে তা বর্তমান অনুজ্ঞা হয় এক গ্লাস পানি দাও। এদিকে আসো।

অতীত কাল ()

অতীত কালঃ (Past Tense) অতীতে যে ক্রিয়া সম্পন্ন হতো তাকে অতীত কাল বলে।

  • অতীত কাল চার প্রকারঃ সাধারণ অতীত, ঘটমান অতীত, পুরাঘটিত অতীত এবং নিত্য অতীত ।

ক) সাধারণ অতীতঃ (Past Indefinite) বর্তমানের সামান্য আগে যে ক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে বোঝায়, তাকে সাধারণ অতীত কাল বলে। ক্রিয়ার শেষে ল, লে, লাম ।

যেমন- প্রদিপ নিভে গেল । রহিম সেখানে বেড়াতে গেল

খ) ঘটমান অতীতঃ (Past Continuous) যে ক্রিয়া অতীত কালে চলছিল বোঝায়, তাকে ঘটমান অতীত বলে। ক্রিয়ার শেষে ছিল, ছিলাম ।

যেমন- আমরা তখন বই পড়ছিলাম

তারা মাঠে খেলছিল

গ) পুরাঘটিত অতীতঃ (Past Perfect) অতীতের যে ক্রিয়া বহু পূর্বেই ঘটে এবং পরে আরো কিছু ঘটনা ঘটেছে, তার কালকে পুরাঘটিত অতীত কাল বলে। ক্রিয়ার শেষে ইয়াছিলেন, ইয়েছিলেন, এছিলেন।

যেমন- বৃষ্টি শেষ হওয়ার আগেই আমরা বাড়ি পৌছেছিলাম।

খবরটা তুমি আমাকে চিঠিতে জানিয়েছিল । (শেষে – ত, তে, তাম)

ঘ) নিত্য বৃত্ত অতীতঃ (Past Habitual) অতীত কালে প্রায়ই ঘটতো এমন বোঝালে নিত্য বৃত্ত অতীত কাল হয়।

যেমন- কামনা প্রকাশেঃ আজ যদি সুমন আসত, কেমন মজা হতো।

অসম্ভব কল্পনাঃ – দশ যদি হতো একশ দশ।

ভবিষ্যৎ কাল ()

ভবিষ্যৎ কালঃ (Future Tense) যে ক্রিয়া সম্পন্ন হবে তাকে ভবিষ্যৎ কাল বলে। ভবিষ্যৎ কাল তিন প্রকার সাধারণ, ঘটমান ভবিষ্যৎ এবং ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা ।

ক) সাধারণ ভবিষ্যৎঃ (Future Indefinite) ভবিষ্যৎ কালে যে কাজ সাধারণভাবে সম্পন্ন হবে বোঝায়, তাকে সাধারণ ভবিষ্যৎ বলে। যেমন- শীঘ্রই বৃষ্টি আসবে। আমরা পড়তে বসবো।

খ) ঘটমান ভবিষ্যৎঃ (Future Continuous) যে ক্রিয়া ভবিষ্যৎ কালে শুরু হয়ে চলতে থাকবে, তাকে ঘটমান ভবিষ্যৎ কাল বলে । যেমন- আমি বই পড়তে থাকবো। এমন ঘটটেই থাকবে।

গ) পুরাঘটিত ভবিষ্যৎঃ (Future Perfect) ক্রিয়ার যে কাল ভবিষ্যতে শুরু হয়ে ভবিষ্যতে শেষ হবে এবং তার ফল ভবিষ্যতে চলমান থাকবে তাকে পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ বলে।

যেমন- আমি বইটি পড়ে থাকবো

ঘ) ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞাঃ (Future Imperative) ভবিষ্যৎ কালে কাউকে আদেশ, অনুরোধ, উপদেশ বুঝালে ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা হয়।

যেমন- ভালো করে পড়াশুনা করিও । আমাদের বাসায় আসিও। ভালো ভাবে পৌঁছে যেয়ো

অনেক সময়ে কালে ক্রিয়াবিভক্তি যে কালের হয়, ঘটনা সেই কালের হয় না। তাকে কালের বিশিষ্ট প্রয়োগ বলে।

বাংলা

  • একাধিক পদ বা উপবাক্যকে একটি শব্দে প্রকাশ করা হলে, তাকে বাক্য সংক্ষেপণ বলে। এটি বাক্য সংকোচন বা এক কথায় প্রকাশেরই নামান্তর।

বাক্য সংক্ষেপণের বা বাক্য সংকোচণের উদাহরণ

অকালে পক্ব হয়েছে যা – অকালপক্ব।

অভিজ্ঞতার অভাব আছে যার – অনভিজ্ঞ।

অনেকের মধ্য একজন – অন্যতম

আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত – আদ্যন্ত, আদ্যোপান্ত।

আচারে নিষ্ঠা আছে যার –আচারনিষ্ঠ।

আপনাকে যে পণ্ডিত মনে করে – পণ্ডিতম্মন্য।

আল্লাহ্‌র অস্তিত্বে বিশ্বাস নেই যার – নাস্তিক।

ইতিহাস বিষয়ে অভিজ্ঞ যিনি – ইতিহাসবেত্তা।

ঈষৎ আমিষ (আঁষ) গন্ধ যার – আঁষটে।

ঊপকারীর উপকার যে স্বীকার করে না –অকৃতজ্ঞ।

একই মাতার উদরে জাত যে – সহোদর।

কর্ম সম্পাদনে পরিশ্রমী – কর্মঠ।

চক্ষুর সম্মুখে সংগঠিত – চাক্ষুষ।

তল স্পর্শ করা যায় না যার – অতলস্পর্শী।

নষ্ট হওয়ার স্বভাব যার – নশ্বর।

নৌকা দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে যে – নাবিক।

ফল পাকলে যে গাছ মরে যায় – ওষধি।

বিশ্বজনের হিতকর – বিশ্বজনীন।

যা দমন করা যায় না – অদম্য।

যা নিবারণ করা কষ্টকর – দুর্নিবার।

যার উপস্থিত বুদ্ধি আছে – প্রত্যুৎপন্নমতি।

অক্ষিত সমক্ষে বর্তমান – প্রত্যক্ষ।

অহংকার নেই যার – নিরহংকার।

অনুতে (বা পশ্চাতে) জন্মেছে যে – অনুজ।

আকাশে বেড়ায় যে – আকাশচারী, খেচর।

আপনাকে কেন্দ্র করে যার চিন্তা – আত্নকেন্দ্রিক।

আল্লাহ্‌র অস্তিত্বে বিশ্বাস আছে যার – আস্তিক।

ইতিহাস রচনা করেন যিনি – ঐতিহাসিক।

ইন্দ্রিয়কে জয় করেন যে – জিতেন্দ্রিয়।

উপকারীর উপকার যে স্বীকার করে – কৃতজ্ঞ।

উপকারীর অপকার করে যে – কৃতঘ্ন।

এক থেকে শুরু করে ক্রমাগত – একাদিক্রমে।

কোনো ভাবেই যা নিবারণ করা যায় না – অনিবার্য।

জীবিত থেকেও যে মৃত – জীবন্মুত।

দিনে যে একবার আহার করে –একাহারী।

নদী মেখলা যে দেশের – নদীমেখলা।

পা থেকে মাথা পর্যন্ত – আপাদমস্তক।

বিদেশে থাকে যে – প্রবাসী।

মৃতের মতো অবস্থা যার – মুমূর্ষু।

যা দমন করা কষ্টকর – দুর্দমনীয়।

যা পূর্বে ছিল এখন নেই – ভূতপূর্ব।

যার সর্বস্থ হারিয়ে গেছে – সর্বহারা, হুতসর্বস্ব।

যার কোনো কিছু থেকেই ভয় নেই – অকুতোভয়।

যা বিনা যত্নে লাভ করা গিয়েছে – অযত্নলব্ধ।

যা সাধারণের মধ্য দেখা যায় না এমন – অনন্যসাধারণ।

যা পূর্বে দেখা যায়নি এমন – অদৃষ্টপূর্ব।

যা কষ্টে লাভ করা যায় – দুর্লভ।

যা জলে চরে – জলচর।

যা জলে ও স্থলে চরে – উভচর।

যা কখনো নষ্ট হয় না – অবিনশ্বর।

যা বলার যোগ্য নয় – অকথ্য।

যার বংশ পরিচয় স্বভাব কেউই জানে না – অজ্ঞতকুলশীল।

যা চিন্তা করা যায় না – অচিন্তনীয়, অচিন্ত্য।

যা সম্পন্ন করতে বহু ব্যয় হয় – ব্যয়বহুল।

যার বিশেষ খ্যাতি আছে – বিখ্যাত।

যা উদিত হচ্ছে – উদীয়নাম।

যার কোনো উপায় নেই – নিরুপায়।

যা পূর্বে শোনা যায়নি – অশ্রুতপূর্ব।

যা বাস্ত থেকে উৎখাত হয়েছে –  উদ্বোস্ত।

যা গাছ অন্য গাছকে আশ্রয় করে বাঁচে – পরগাছা।

যে গাছে ফল ধরে, কিন্তু ফুল ধরে না – বনস্পতি।

যে নারীর সন্তান বাঁচে না – মৃতবৎসা।

যে মেয়ের বিয়ে হয়নি – অনূঢ়া।

যে ভবিষ্যতের চিন্তা করে না বা দেখে না – অপরিণামদর্শী।

যে বিষয়ে কোনো বির্তক (বা বিসংবাদ) নেই –অবিসংবাদিত।

যে বন হিংস্র জন্তুতে পরিপূর্ণ – শ্বাপদসংকুল।

যে নারী বীর সন্তান প্রসব করে – বীরপ্রসূ।

যে নারী জীবনে একমাত্র সন্তান প্রসব করেছে – কাকবন্ধ্যা।

যে রব শুনে এসেছে – রবাহুত।

শুভ ক্ষণে জন্ম যার – ক্ষণজন্মা।

সকলের জন্য প্রযোজ্য – সর্বজনীন।

যার আকার কুৎসিত – কদাকার।

যা বার বার দুলছে – দোদুল্যমান।

যা দীপ্তি পাচ্ছে – দেদীপ্যমান।

যা কষ্টে জয় লাভ করা যায় – দুর্জয়।

যা অধ্যয়ন করা হয়েছে – অধীত।

যা স্থলে চরে – স্থলচর।

যা বলা হয়নি – অনুক্ত।

যা মর্ম স্পর্শ করে – মর্মস্পর্শী।

যা অতি দীর্ঘ নয় – নাতিদীর্ঘ।

যার প্রকৃত বর্ণ ধরা যায় না – বর্ণচোরা।

যা কোথাও উঁচু কোথাও নিচু – বন্ধুর।

যা খুব শীতল বা উষ্ণ নয় – নীতিশীতোষ্ক।

যা আঘাত পায়নি – অনাহত।

যার অন্য উপায় নেই – অনন্যোপায়।

যা ক্রমশ বর্ধিত হচ্ছে – বর্ধিস্মু।

যে শুনেই মনে রাখতে পারে – শ্রুতিধর।

যে নারী নিজে বর বরণ করে নেই – স্বয়ংবরা।

যে রোগ নির্ণয় করতে হাতড়ে মরে – হাতুড়ে।

যে গাছ কোনো কাজে লাগে না – অগাছা।

যে পুরুষ বিয়ে করেছে – কৃতদার।

যে ক্রমাগত রোদন করছে – রোরুদ্যমান।

যে ভবিষৎ না ভেবেই কাজ করে – অবিমৃষ্যকারী।

যিনি বক্তৃতা দানে পটু –বাগ্মী।

যে সকল অত্যাচারই সয়ে যায় – সর্বংসহা।

যে নারী কোনো সন্তান হয় না – বন্ধ্যা।

যে পুরুষের চেহারা দেখতে সুন্দর – সুদর্শন।

লাভ করার ইচ্ছা – লিপ্সা।

সম্মুখে অগ্রসর হয়ে অভ্যর্থনা – প্রত্যুদ্‌গমন।

হনন করার ইচ্ছা – জিঘাংসা।

বাংলা ব্যাকরণের প্রাথমিক আলোচনা*

* ব্যাকরণ একটি তৎসম/সংস্কৃত শব্দ।

* ব্যাকরণ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ- বিশেষভাবে বিশ্লেষণ।

* ব্যাকরণশব্দটি আলাদা করলে হয়ঃ বি+আ+  +অন।

* ব্যাকরণকে বলা হয় ভাষায় সংবিধান বা বিধান ।

* ব্যাকরণের কাজ ভাষাকে বিশ্লেষণ করা বা ভাষার অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখা।

* ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা হলো ভাষার শুদ্ধা-শুদ্ধি নির্ণয় করা।

* ব্যাকরণ ও ভাষার মধ্যে আগে ভাষারই সৃষ্টি হয়েছে।

* ব্যাকরণের মূল ভিত্তি ভাষা।

* ব্যাকরণ ভাষার স্বরুপ ও প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করে।

* যে শাস্ত্রে বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে ভাষার নিয়ম রীতি-নীতি রচিত হয়েছে তাকে বাংলা ব্যাকরণ বলে।

* প্রথম বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ‘ভোকাবুলারি ইম ইদমা বেনগলা ই পর্তুগিজ’ (Vocabularia em idiome Bengala e portugez) রচনার চেষ্টা করেন মানোয়েল দ্যা আসসুম্পসাঁও, যেটি ১৭৩৪ সালে রচিত করেন এবং ১৭৪৩ সালে প্রকাশিত করেন । তবে এটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাকরণ গ্রস্থ নয় বরং অভিধান বা শব্দ কোষ। এটি রচিত হয় পর্তুগিজ ভাষায়।

* এরপর ১৭৭৮ সালে ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড- ‘এ গ্রামার অব দি বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ’ নামক একটি ব্যাকরণ রচনা করেন। এটিকে বাংলা ভাষায় প্রথম পূর্ণাঙ্গ ব্যাকরণ গ্রন্থ হিসেবে ধরা হয়। তবে এ গ্রন্থটিও ইংরেজি ভাষায় রচিত।

* উইলিয়াম কেরি ১৮০১ সালে ইংরেজি ভাষায় বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন।

* বাঙালি লেখকদের মধ্যে সর্বপ্রথম রাজা রামমোহন রায় ১৮২৬ সালে ইংরেজি ভাষায় বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন। পরবর্তীতে ১৮৩ সালে ‘কলকতা স্কুল বুক সোসাইটি’র অনুরোধে তা বাংলা অনুবাদ করে ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ নামে প্রকাশ করেন ।

* বাঙালির দ্বারা রচিত প্রথম বাংলা ব্যাকরণ ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ ।

* সংস্কৃত ভাষায় প্রথম ব্যাকরণ রচনা করেন – পানিনি।

* প্রত্যেক ভাষার মৌলিক অংশ/উপাদান চারটিঃ-

            ১. ধ্বনি (Sound), ২. শব্দ (Word), ৩. বাক্য (Sentence), এবং ৪. অর্থ (Meaning)

* ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়ঃ

            ১। ধ্বনি (phonology)

            ২। রূপতত্ব/শব্দতত্ব (morphology)

            ৩। বাক্যতত্ব (syntax)

            ৪। অর্থতত্ব (semantics)

          উল্লেখিত এই চারটি তত্ব নিয়ে ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় গড়ে উঠেছে।

            এছাড়াও অভিধান তত্ব, ছন্দ ও অলংকার প্রভূতি ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় ।

ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনাঃ

  • ধ্বনিতিত্বঃ (phonology) ধ্বনির উচ্চারণ প্রণালী, উচ্চারণের স্থান, বাগযন্ত্র- সন্ধি, ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধান, এবং ধ্বনি ও বর্ণ।

  • রূপতত্ব/শব্দতত্ব্বঃ (morphology) পদ, ক্রিয়ার কাল, বচন, সমাস, উপসর্গ, অনুসর্গ, দ্বিরূক্ত শব্দ, সংখ্যা বাচক শব্দ, নর- নারী বাচক শব্দ, শব্দের উপাদান ইত্যাদি।

  • বাক্যতত্ব বা পদক্রমঃ (syntax) ভাষার প্রধান উপাদান-বাক্য। বাগধারা, বিরাম চিহ্ন, বাক্যপ্রকরণ, বাক্যের গঠনপ্রনালী, এক কথায় প্রকাশ ইত্যাদি।

  • অর্থতত্বঃ (semantics) ব্যাকরণের যে অংশে শব্দ, শব্দের অর্থ বিচার ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয় সে অংশের নাম অর্থতত্ব। মূখ্যার্থ, গৌণার্থ, বিপরীতার্থ, শব্দ, বর্গ ও বাক্যের ব্যঞ্জনা ইত্যাদি।

বাংলা

বানান

  • বানান শব্দের অর্থ বর্ণন অথবা বর্ণনা করা।

  • পরিপূর্ণভাবে ধ্বনি অনুযায়ী বানান লেখার নিয়ম বিশ্বের কোনো ভাষায় নেই।

  • বাংলাচাষার প্রথম বানানের নিয়ম চালু করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৩৬ সালে)

  • বাংলাদেশে প্রথম বানানের নিয়ম চালু করেন টেক্সস বুক বোর্ড ও বাংলা একাডেমি। (“বাংলা শব্দের বানানের নিয়ম” গ্রন্থটির নাম)

সহজ বাংলা বানানের নিয়ম

          ১. জাতি, ভাষা, বস্তু ও প্রাণীর নামের শেষে ‘ই’ কার বসে।

  • যেমনঃ বাঙালি, বাঁশি, হাতি।

  • বিদেশী শব্দে ‘ই’ কার বসে।

  • যেমন- স্টিমার, ইরানি ।

২. রেফযুক্ত শব্দে দিক্ত ব্যঞ্জন হয় না । যেমন- কর্ম  = কর্ম্ম , ধর্ম  = ধর্ম্ম

৩. তৎসম শব্দে র এর পর ণ হয়। রেফ, ফলা, ষ, ঋ, ক্ষ, ণ থাকলে তৎসম শব্দ হয়। (বেশি ভাগেই)

  • যেমন- হরিণ, মরণ, চরণ, রণ।

তবে কাজ বোঝালে ন হবে।

  • যেমন- ধরুন, মারুন, পড়ুন ।

৪. ট, ঠ, ড, এই বর্ণ গুলোর যুক্তবর্ণে ‘ণ’ বসে।

  • যেমন- লুণ্ঠন, ভণ্ড।

  • তবে দেশি বিদেশী শব্দে ন বসে। স্টেশন, কমান্ডার, প্যান্ট।

  • ত, থ, দ, ধ, এই বর্ণগুলোর যুক্তবর্ণে ‘ন’ বসে।

  • যেমন- অন্ত, বন্দী, বন্ধন ।

৫. ট, ঠ এই দুটি বর্ণের পূর্বে ষ বসে ।

  • নষ্ট, দুষ্ট, ওষ্ঠ তৎসম ক্ষেত্রে বসে।

  • দেশি বিদেশী ক্ষেত্রে হয় না।

৬. আলি প্রত্যয় যুক্ত শব্দে ‘ই’ বসে।

  • যেমন- স্বর্নালি, বর্নালি, মিতালি ইত্যাদি ।

৭. অনেক সময় ভুল উচ্চারনের জন্য আমরা বানান ভুল লিখি-

  • যেমন- অনেকেই বলেন মুখস্ত অধীনস্ত, ভূমিষ্ট সঠিক হবে মুখস্ত অধনীস্থ ভূমিষ্ঠ।

৮. অঞ্জলি বানানের শেষে ই কার বসে।

  • গীতাঞ্জলি = পুষ্পাঞ্জলি, শ্রদ্ধাঞ্জলি।

বাক্য প্রকরণ

  • যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা কোনো বিষয়ে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণভাবে প্রকাশিত হয়, তাকে বাক্য বলে।

  • সার্থক বাক্যের দুটি অংশ থাকেঃ উদ্দেশ্য ও বিধেয়।

  • বাক্যের যে অংশে কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলা হয়, তাকে উদ্দেশ্য এবং উদ্দেশ্য সম্বন্ধে যা বলা হয়, তাকে বিধেয় বলে ।

যেমন- রহিম বল খেলে

রহিম বাক্যটি উদ্দেশ্য এবং বল খেলে অংশটি বিধেয়

যেমন-   খোকা এখন                    বই পড়ছে

            (উদ্দেশ্য)                       (বিধেয়)

  • বিশেষ্য ও বিশেষ্যস্থানীয় অন্যান্য পদ বা পদসমষ্টিযোগে গঠিত বাক্যাংশেও বাক্যের হতে পারে।

যেমন-

সৎ লোকেরাই প্রকৃত সুখী।            – বিশেষ্যরূপে ব্যবহুত বিশেষণ ।

মিথ্যা কথা বলা খুবই অন্যায়।         – ক্রিয়াজাত বাক্যাংশ।

  • সার্থক বাক্যের বাক্যর তিনটি গুণ থাকা চাই।

যেমন- (১) আকাঙ্ক্ষা       (২) আসত্তি         (৩) যোগ্যতা

     (১) আকাঙ্ক্ষাঃ অসম্পূর্ণ বাক্য সম্পূর্ণ শোনার যে ইচ্ছা তাই আকাঙ্ক্ষা।

          অথবা বাক্যের অর্থ পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্য পদের পর অন্য পদ শোনার যে ইচ্ছা তা-ই আকাঙ্ক্ষা ।

            বাগানে ফুল —-

            ছেলেমেয়েরা ফুটবল —-

     (২) আসত্তিঃ বাক্যকে ব্যাকরণ সম্মতভাবে সাজিয়ে লেখাকে আসত্তি বলে।

অথবা মনোভাব প্রকাশের জন্য বাক্যে শব্দগুলো এমনভাবে পরপর সাজাতে হবে যাতে মনোভাব প্রকাশ বাধাগ্রস্ত না হয়। বাক্যের অর্থসঙ্গতি রক্ষার জন্য সুশৃওঙ্খল পদবিন্যাসই আসত্তি।

যেমন- কাল আমাদের স্কুলে পুরস্কার বিতরণী উৎসব অনুষ্ঠিত হবে ।

    (৩) যোগ্যতাঃ বাক্যস্থিত পদসমূহের অন্তর্গত এবং ভাবগত মিলবন্ধনের নাম যোগ্যতা।

যেমন- গরু আকাশে উড়ে –

শব্দ যোগ্যতা হারায় – (১) দুর্বোধ্যতার, (২) বাহুল্য দোষে, (৩) সাধু চলিত মিশ্রন, (৪) উপমার ভূল প্রয়োগ, (৫) বাগধারার জাতিভূল (এসব কারণে বাক্য তার যোগ্যতা হারায়)

  • গঠন অনুযায়ী বাক্যের প্রকারভেদঃ

  • বাক্য তিন প্রকারঃ

(১) সরল বাক্য

(২) মিশ্র বা জটিল বাক্য এবং

(৩) যৌগিক বাক্য

     (১) সরল বাক্যঃ যে বাক্যে একটিমাত্র কর্তা (উদ্দেশ্য) এবং একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া (বিধেয়) থাকে, তাকে সরল

            বাক্য বলে।

            যথা- পুকুরে পদ্মফুল জন্মে। এখানে ‘পদ্মফুল’ উদ্দেশ্য এবং ‘জন্মে’ বিধেয়।

     (২) মিশ্র বা জটিল বাক্যঃ যে বাক্যে একটি প্রধান খণ্ডবাক্যের এক বা একাধিক আশ্রিত বাক্য পরস্পর সাপেক্ষ

ভাবে ব্যবহুত হয়, তাকে মিশ্র বা জটিল বাক্য বলে।

[চেনার উপায়ঃ যে-যিনি, যিনি-তিনি, যেমন-তেমন, যে-সে, যাঁরা-তাঁরা, যা-তা প্রভৃতি সাপেক্ষ সর্বনাম এবং

যদি-তবে, যদিও০তবু, যেহেতু-সেহেতু, যত-তত, যেটুকু-সেটুকু, যেমন-তেমন, যখন-তখন প্রভৃতি সাপেক্ষ

যোজক দিয়ে যখন অধীন বাক্যগুলো যুক্ত থাকে, তাকে জটিল বাক্য বলে।] প্রভৃতি সাপেক্ষ সর্বনামের বর্ণ

নিয়ে গঠিত পদকে মিশ্র বা জটিল বাক্য বলে ।

যেমন –যখন বৃষ্টি নামল, তখন আমরা ছাতা খুঁজতে শুরু করলাম।

            যদি তুমি যাও, তবে তার দেখা পাবে ।

            আশ্রিত বাক্য                   প্রধান খণ্ডবাক্য

১. সে পরিশ্রম করে,                     সে-ই সুখ লাভ করে।

২. সে যে অপরাধ করেছে,             তা মুখ দেখেই বুঝেছি ।

     (৩) যৌগিক বাক্যঃ পরস্পর নিরপক্ষ দুই বা ততোধিক সরল বা মিশ্র বাক্য মিলিত হয়ে একটি সম্পূর্ন বাক্য গঠন

করলে তাকে যৌগিক বাক্য বলে ।

জ্ঞাতব্যঃ যৌগিক বাক্যের অন্তর্গত নিরপেক্ষ বাক্যগুলো এবং, ও, কিন্তু, অথবা, বা, কিংবা, বরং, কিন্তু অথচ, সেজন্য, ফলে, তথাপি, ইত্যাদি যৌগিক বাক্য ব্যবহুত হয়ে থাকে। (কমা (,), সেমিকোলন (;), কোলন (ঃ), ড্যাস (-), প্রভৃতি অব্যয় যোগে সংযুক্ত বা সমন্বিত থাকে।

যেমন – নেতা জনগনকে উৎসাহিত করলেন বটে, কিন্তু কোনো পথ দেখাতে পারলেন না ।

বস্ত্র মলিন কেন, কেহ জিজ্ঞাসা করিলে সে ধোপাকে গালি পাড়ে, অথচ ধৌত বস্ত্রে তাহার গৃহ পরিপূর্ণ।

উদায়ান্ত পরিশ্রম করব, তথাপি অন্যের দ্বারস্থ হব না।

অন্ধকার হয়ে এসেছে- বন্ধুরাও মুখ ভার করে রইল।

কারক

  • ব্যাকরণের শব্দতত্ত্বে আলোচিত হয়।

  • কারক শব্দটি বিশ্লেষণ করলে পাই কৃ + অক (ণক)

  • যা ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে কারক বলে ।

  • ক্রিয়া পদের সাথে নাম পদের যে সম্পর্ক তাকে কারক বলে।

  • বাক্যের ভেতরে ক্রিয়াপদের সঙ্গে অন্যান্য পদের সম্পর্ক কারক ৬ প্রকার ।

কারক মোট ছয় প্রকারঃ

১। কর্তৃকারক

২। কর্মকারক

৩। করণ কারক

৪। অপাদান কারক

৫। অধিকরণ কারক

৬। সম্বন্ধ কারক

      ১। কর্তৃকারকঃ কোনো বাক্যে যে – ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে কর্তৃকারক বলে।যেমন- তামিম পড়ে । বাক্যটিতে দুটি পদ রয়েছেঃ ‘তামিম’ এবং ‘পড়ে’ । ক্রিয়াপদ হল ‘পড়ে’ । ক্রিয়াপদকে ‘কে’ বা ‘কারা’ দিয়ে প্রশ্ন করে উত্তর পেলে, তা কর্তৃকারক । যেমন- কে পড়ে? উত্তর হবে – ‘সুমন’ । সুতারাং ‘সুমন’ কর্তৃকারক । এরূপঃ শিক্ষক পড়ান । নিতু গান গায় । খুশি বই পড়ে ।

      কর্তৃকারকের প্রকারভেদঃ

      ১. মুখ্য কর্তাঃ যে নিজে নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে সে মুখ্য কর্তা।

      যেমন- ছেলেরা ফুলবল খেলেছে । মুষলধারে বৃষ্টি পড়েছে ।

      ২. প্রযোজক কর্তাঃ মূল কর্তা যখন অন্যকে কোনো কাজে নিয়োজিত করে তা সম্পন্ন করায়, তখন তাকে প্রযোজক

            কর্তা বলে। যেমন- শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন ।

      ৩. প্রযোজ্য কর্তাঃ মূল কর্তার করণীয় কার্য যাকে দিয়ে সম্পাদিত হয়, তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলা হয়।

ওপরের বাক্যে ‘ছাত্র’ প্রযোজ্য কর্তা।

      ৪. ব্যতিহার কর্তাঃ কোনো বাক্যে যে দুটো কর্তা একত্রে একজাতীয় ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাদের ব্যতিহার

            কর্তা বলে। যেমন- বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খায়।

      ২। কর্মকারকঃ যাকে আশ্রয় বা অবলম্বন করে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে, তাকে কর্মকারক বলে।

            যেমন- সুমন বই পড়ে । ক্রিয়াকে ‘কী’ বা ‘কাকে’ প্রশ্ন করে উত্তর পেলে, তা কর্মকারক ।

            যেমন- ‘কী পড়ে’?

            উত্তর হবে – ‘বই’ ।

            সুতারাং ‘বই’ কর্মকারক । ‘বই’ – কে আশ্রয় বা অবলম্বন করে কর্তা (সুমন) কাজটি (ক্রিয়া) সম্পন্ন করেছে।

            এরূপঃ খুকি বই পড়ে । গরু ঘাস খায় ।

     ৩। করণকারকঃ কর্তা যা দিয়ে বা যার সাহায্যে ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে করণকারক বলে। যেমন – আমরা কলম

            দিয়ে লিখি । ক্রিয়াকে ‘কীসের দ্বারা’ বা ‘কীসের সাহায্যে; প্রশ্ন করে উত্তর পেলে, তা করণকারক ।

            যেমন – কী দিয়ে লিখি?

            উত্তর হবে- ‘কলম দিয়ে’ । সুতরাং ‘কলম দিয়ে’ করণকারক।

            এরূপঃ আমরা চোখে দেখি । রনি কলমে লেখে ।

  • সস্প্রদান কারকঃ নিঃস্বার্থ ভাবে দান বা সাহায্য করা বুঝালে সম্প্রদান কারক ।

যেমন- ভিক্ষারিকে পয়সা দাও । ক্রিয়াকে ‘কাকে’ বা ‘কার জন্য’ প্রশ্ন করে উত্তর পেলে, তা সম্প্রদান কারক ।

যেমন- কাকে? উত্তর হবে- ‘ভিক্ষারিকে’ । সুতারাং ‘ভিক্ষারিকে’ সম্প্রদান কারক।

এরূপঃ গরিবকে দান কর।

দরিদ্রকে ধন দাও।

       ৪। অপাদান কারকঃ যা থেকে কোনো কিছু উৎপন্ন, ভীত, শ্রুত, রক্ষীত, আরম্ভ, গৃহীত বোঝায় তাকে অপাদান

কারক বলে। যেমন- অপাদান করক পাওয়ার উপায় ক্রিয়াকে কোথায় হতে/কীসে হতে কীসের প্রশ্ন করতে

            হয়।

            বিচ্যুতঃ গাছ থেকে পাতা পড়ে । মেঘে বৃষ্টি হয়।

            গৃহীতঃ   শুক্তি থেকে মুক্তো মেলে । দুধ থেকে দই হয়।

            উৎপন্নঃ দুধ থেকে ঘি হয় । জমি থেকে ফসল পাই । খেজুর রসে গুড় হয়। তিলে তেল হয়।

            বিরতঃ   পাপে (অর্থাৎ পাপ থেকে) বিরত হও।

            দূরীভূতঃ দেশ থেকে পঙ্গপাল চলে গেছে।

রক্ষা করাঃ বিপদে থেকে বাঁচাও।

আরম্ভঃ    রবিবার থেকে পরীক্ষা আরম্ভ ।

ভীতঃ        বাঘকে ভয় পায় না কে?

      ৫। অধিকরণ কারকঃ যে স্থানে বা যে সময়ে ক্রিয়া সম্পন্ন হয়, তাকে অধিকরণ কারক বলে।

            যেমন- পুকুরে মাছ আছে। ক্রিয়াকে ‘কোথায়’ বা ‘কখন’ প্রশ্ন করে উত্তর পেলে, তা অধিকরণ কারক ।

            যেমন- কোথায় মাছ আছে? উত্তর হবে- ‘পুকুরে’ ।  সুতারাং ‘পুকুরে’ অধিকরণ কারক ।

     ৬। সম্বন্ধ কারকঃ যে কারকে বিশেষ্য ও সর্বনামের সঙ্গে বিশেষ্য ও সর্বনামের সম্পর্ক নির্দেশিত হয়, তাকে সম্বন্ধ

            কারক বলে। এই কারকে ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পরোক্ষ । এই কারকে শব্দের সঙ্গে ‘-র’, -এর’, ‘য়ের’, ‘-কার’,

‘-কের’, ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়।

যেমন- ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না

আমার জামার বোতামগুলো একটু অন্য রকম।

তখনকার দিনে পায়ে হেঁটে চলতে হতো মাইলের পর মাইল ।

উদাহরণঃ

ক্রিয়া পদের সাথে যে করকের সম্পর্ক থাকে না তাকে সম্বন্ধ কারক বলে।

যেমন- রহিমের ভাই ঢাকা যাবে। সম্বন্ধ কারকে র এর বিভক্তি বসে।

  • বিভক্তিঃ বাক্যের মধ্যে কারক ও বিভক্তির সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।

  • যে- সব চিহ্নের (অর্থেৎ বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি) দ্বারা বাক্যস্থিত ক্রিয়ার সঙ্গে অন্যান্য পদের সম্বন্ধ নির্ধারিত হয় সেই সব চিহ্নকে বিভক্তি বলে। বিভক্তি প্রধানত ২ প্রকার । ক্রিয়া বিভক্তি – নাম / শব্দ বিভক্তি।

  • বাংলায় শব্দ বিভক্তি সাতটিঃ প্রথমা, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী, সপ্তমী। একবচনে ও বহুবচনে এই সাত প্রকার বিভক্তির পৃথকরূপ ব্যবহুত হয়। যেমন- বিভক্তি একটি ভাষিক উপাদান।

বিভক্তি

একবচন

বহুবচন

প্রথমা

অ, আ, ই, উ

রা, এরা গুলি (গুলো), গুণ

দ্বিতীয়া

কে, রে

দিগকে, দিগেরে, দেরে

তৃতীয়া

দ্বারা, দিয়া (দিয়ে), কর্তৃক

দিগের দ্বারা, দের দ্বারা, দিগ কর্তৃক, দের দিয়ে

চতুর্থী

কে, রে

দিগকে, দিগেরে, দিগের, দেরে

পঞ্চমী

হতে, হইতে, থেকে,  চেয়ে

দিগের হইতে, দের হতে, দের হইতে, দিগের চেয়ে, দেও চেয়ে, দিগ থেকে

ষষ্ঠী

র, এর, দের

দিগের, দের, গুলির, গণের

সপ্তমী

এ, য়, তে

দিগেতে, দিগে, গুলিতে

 

উপরে দেয়া Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে পিডিএফ প্রশ্ন উত্তর ডাউনলোড করে নিন। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে  ইনবক্স করুন WhatsApp নাম্বারে ০১৭৭৩৫৮৬১৭৬ । ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের Website www.eduexplain.com  ও You Tube Channel Subscribe  করতে পারো এই লিংক থেকে 

Related Posts

তৃতীয় শ্রেণি

সকল সাবজেক্টের অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান ও পরীক্ষা প্রস্তুতি

চতুর্থ শ্রেণি

সকল সাবজেক্টের অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান ও পরীক্ষা প্রস্তুতি

পঞ্চম শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান ও বৃত্তি পরীক্ষা প্রস্তুতি

ষষ্ঠ শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সৃজনশীল, জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক ও বহুনির্বাচনি

সপ্তম শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সৃজনশীল, জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক ও বহুনির্বাচনি

অষ্টম শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান ও জেএসসি পরীক্ষা প্রস্তুতি

নবম-দশম শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান, মডেল টেস্ট ও এসএসসি পরীক্ষা প্রস্তুতি

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি

অধ্যায়ভিত্তিক সমাধান, মডেল টেস্ট ও এসএসসি পরীক্ষা প্রস্তুতি

ক্যাডেট ভর্তি প্রস্তুতি বাংলা সাজেশন ও সমাধান।

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.